দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত সোমবার লাদাখে যে অঞ্চলে ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল, উপগ্রহ থেকে সেখানকার ছবি তোলা হয়েছে কিছুদিন আগে। তাতে দেখা গিয়েছে, গালওয়ান নদীর গতিধারা ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে চিন। যেখানে সংঘর্ষ হয়েছিল, তার থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ওই চেষ্টা হচ্ছে।
কিছুতেই মিটতে চাইছে না চীন–ভারত সীমান্ত সমস্যা। ভারতীয় সেনাদের উপর বর্বরোচিত হামলার পর এবার গালওয়ান নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে দিতে বা প্রবাহ বন্ধ করতে মরিয়া চীন। নদীর গতিপথ আটকাতে ইতিমধ্যে প্রচুর বুলডোজার এনে ফেলা হয়েছে পাথর। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে একটি উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করে এমনই দাবি করা হয়েছে। তেমনই জানাযাচ্ছে একটি সূত্রে।
উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়া ওই চিত্রে দেখা যাচ্ছে, নদীর গতিধারার চিহ্ন স্পষ্ট হলেও কিন্তু নদীতে কোনও জল নেই। স্রোতধারায় কাদাময়। নদীর ওপরেই নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে চীন। গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রাকগুলি।
স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেগুলি শুকনো নদীর ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সূত্রের খবর গত ২৯ মে থেকেই গালওয়ান নদীর ওপরে চীন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, সীমান্তের কাছে দাঁড়িয়ে আছে চিনের কয়েকশ গাড়ি। তার মধ্যে আছে বেশ কয়েকটি মিলিটারি ট্রাক। একটি সূত্রের খবর, ওই গাড়িগুলিই সোমবার চিনে সৈনিকদের বহন করে নিয়ে এসেছিল সীমান্তে। আপাতত জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে চিনারা পাহাড় থেকে ফেলে দিয়েছিল। অনেক সেনা আহত অবস্থায় পড়ে ছিল পাহাড়ের ওপরে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় তারা মারা যায়।
ভারতীয় সেনা মঙ্গলবার সকালের আগে আহত জওয়ানদের উদ্ধার করতে পারেনি। সোমবার রাতের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কয়েকশ সেনা জড়িত ছিল। চিনারা রড ও কাঁটাওয়ালা লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে। এক কর্নেল সহ মোট ২০ জন সৈনিক চিনাদের হাতে নিহত হয়েছেন।
গত বুধবার জানা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৫ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত গালওয়ান নদীর উপত্যকায় চিনারা একটি তাঁবু বানিয়েছিল। গত ৬ জুন দুই দেশের সেনাকর্তাদের বৈঠকে স্থির হয়, চিন ওই তাঁবু সরিয়ে নেবে।
সোমবার বিকালে ভারতীয় সেনা ওই তাঁবু সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। তখন চিনা জওয়ানরা ভারতীয় সেনার কর্নেল বি এল সন্তোষ বাবুকে আক্রমণ করে। ভারতীয় সেনা সন্তোষ বাবুকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে মারপিট বেধে যায়। দু’পক্ষই আরও সেনা ডেকে পাঠায়। মোট ছ’ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে।
স্যাটেলাইট ইমেজে ধরা পড়া ছবিতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে চীন প্রচুর পরিমাণে বুলডোজার নিয়ে গিয়েছে গালওয়ান উপত্যকায়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বিস্তৃত চিনের সামরিক কনভয়। বেশ কয়েকটি জায়গায় তাঁবুও ফেলা হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেনি চীনও।