দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে প্রশাসনের তরফে বনগাঁ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সংলগ্ন বাজার-হাট, কিসান মান্ডি এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয় রবিবার বিকেল থেকে এবং ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। রবিবার বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “বনগাঁ শহরে দিন কয়েক আগে এক মহিলা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে জনবহুল সড়ক ও সংলগ্ন বাজার-হাট, দোকানপাট সব কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে ২১ দিনের জন্য।’’
প্রশাসন তরফে আগেই জানিয়েছিল, কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে থাকছে যশোর রোড, চাকদা রোড, বাগদা রোড, স্টেশন। ট বাজার, নিউমার্কেট, নেতাজি মার্কেট, রেলবাজার, মতিগঞ্জ হাট— সব বন্ধ থাকছে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “ব্যাঙ্ক,ওষুধের দোকান, পোস্টঅফিস, নার্সিংহোম শর্তসাপেক্ষে খোলা থাকবে। ওই সব এলাকায় আসা কর্তৃপক্ষকে থার্মাল গান দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হবে। রেজিস্ট্রার রাখতে হবে। কারও তাপমাত্রা বেশি থাকলে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর বাড়িতে চলে যাবেন।’’রবিবার সন্ধ্যায় প্রশাসনিক কর্তারা এই সিদ্ধান্ত নেন।
সোমবার সকালে অভিযোগ কয়েক জন স্থানীয় মানুষ অভিযোগ করেন ,ব্যাঙ্ক এর গ্রাহক পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিনা নোটিশে।অনেক গ্রাহক পেনশন,বা প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে পারেননি এদিন,বনগাঁর বাসিন্দা ভবসিন্ধু বাছার এবং রীনা ঘোষ’রা বলেন সকাল ১১টা নাগাদ ব্যাঙ্কে এসে দেখতে পান ভিতর থেকে তালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে , কোন কাজ হয়নি এবং কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্ক বন্ধের জন্য কোন নির্দিষ্ট কারণ ও জানাননি তাঁদেরকে৷ এদিন বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রচুর গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন ।বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন ব্যাঙ্কে কর্মরত পুলিশকে বিষয় টি জানিয়েও কোন কাজ হয়নি৷
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে এই ব্যাঙ্ক,ওষুধের দোকান, পোস্টঅফিস, নার্সিংহোম শর্তসাপেক্ষে খোলা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল কিন্তু সেখানেও অতিরিক্ত ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ ফলে সতর্কতার প্রয়োজনে কিছু ব্যাবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ প্রশাসন ।পুলিশের এক কর্তা জানান কোন ব্যাঙ্ক সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে কিনা স্থানীয় পুলিশ সে বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে৷তবে ব্যাঙ্কগুলিকে কাজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট ভাবে পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়নি এটা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ব্যাপার। দেখুন ভিডিও কি বলছেন গ্রাহকেরা:
বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘পুরসভার ১, ২, ৪, ১০, ১৩ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে থাকা সড়কগুলি কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ওয়ার্ডগুলির বাকি অংশ বাফার জোন। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। পুরসভায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। শহরবাসী প্রয়োজনে ওই কন্ট্রোল রুমে ফোন করলে আমরা খাদ্য সামগ্রী বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেব। বাজার হাট দোকানপাট সব বন্ধ থাকবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে কন্ট্রোল রুমের নম্বর, ০৩২১৫-২৫৫০২১ এবং ৭৯০৮৩০৭৭৭৫।
বারাসাত বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি দেবদাস মন্ডল জানান,সোমবার বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়৷তাঁদের দাবি শহরের মধ্যে ওষুধের দোকান এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু রাখতে হবে। পাশাপাশি সারা দেশজুড়ে যেখানে লকডাউন কিভাবে শিথিল করাযায় সে কথা ভাবছে সরকার ,সেখানে শুধু মাত্র বনগাঁয় কি এমন করোনা সংক্রমণের হঠাৎ করে বৃদ্ধি দেখা গেল এবং তার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যানই বা কোথায় এছাড়া কেন অতিরিক্ত ২১দিনের লকডাউন করতে বাধ্য হলো স্থানীয় প্রশাসন তাঁর প্রশ্ন তোলেন। বনগাঁর মানুষকে অযথা করোনা সংক্রমণের আতঙ্কের মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও এদিন মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে৷