দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ২৫ মার্চ থেকে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। ইতিমধ্যেই ৩০ দিনে পা রেখেছে লকডাউনের মেয়াদ। বন্ধ গাড়ি-ঘোড়া, বন্ধ কলকারাখানা। ঘরবন্দি মানুষ। আর এরই সুফল মিলেছে প্রকৃতিতে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, এই লকডাউনের ফলেই ভারতের দূষণ অনেকটা কমে গেছে। ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, গত ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম উত্তর ভারতের বায়ুদূষণ এতটা কমতে দেখা গেল।
নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ইউনিভার্সিটিস স্পেস রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন বা ইউএসআরএ–র বিজ্ঞানী পবন গুপ্তা বলেন, “লকডাউনের ফলে নানা জায়গায় বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটা বড় পরিবর্তন যে দেখতে পাবো সেটা আমরা জানতাম। কিন্তু গঙ্গা অববাহিকায় বছরের এই সময় অ্যারোসোলের মাত্রা এতটা কম হবে তা ভাবা যায়নি।”
নাসার উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, লকডাউনের পর বাতাসে অ্যারোসোলের মাত্রা অনেকটাই নেমে গিয়েছে। এটাকে ঐতিহাসিকই বলেছে নাসা। অ্যারোসোল এমন এক কণা যা বাতাসের সঙ্গে মিশে দৃশ্যমানতা কমিয়ে দেয়। এটি বাতাসের সঙ্গে মিশে থাকার ফলে মানুষের ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্রেরও ক্ষতি করে।
এদিকে দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার কার্যকরী সহকারী সচিব অ্যালিস জি ওয়েলস টুইট করে বলেন, “২০১৬ থেকে প্রতি বছর বসন্তে উপগ্রহ চিত্র তোলে নাসা। ভারত এবং গোটা বিশ্ব যখন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে তখন এটা ভুললে চলবে না মানুষের একজোট সহযোগিতাই প্রকৃতিকে পরিষ্কার রাখতে পারে।”
শুধুই কি লকডাউন নাকি ভারতের বায়ুমণ্ডলে দূষণের মাত্রা এতটা কমে যাওয়ার পিছনে আরও কারণ রয়েছে তা বুঝতে বেশ খানিকটা সময় লাগে বিজ্ঞানীদের। পরে নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মার্চের শেষের দিকে উত্তর ভারতে ভাল বৃষ্টি হওয়ায় বায়ুমণ্ডল থেকে অ্যারোসোলের মাত্রা কমেছে, এটা আরও বেশি করে বাতাসকে দূষণমুক্ত হতে সাহায্য করেছে।
উত্তর ভারতের মতো দক্ষিণ ভারতের ছবি অবশ্য অতটা ভাল নয়। লকডাউন চলাকালীন উত্তর ভারতের বাতাসে যতটা দূষণ কমেছে, দক্ষিণ ভারতের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। দক্ষিণ ভারতের বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা যা আশা করা হয়েছিল, তার তুলনায় বেশিই আছে বলে জানিয়েছে নাসা।