দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতি দিল আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলায় তাঁর যোগ পেয়েছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। এর পর থেকেই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী রানাকে ভারতে নিয়ে আসার চেষ্টায় আরও গতি আনে ভারত। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তাঁকে এ দেশে প্রত্যর্পণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা এবং ভারত। প্রথমে আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তা বিলম্বিত হচ্ছিল।
প্রথমে নিম্ন আদালতে, তার পরে ওয়াশিংটনের প্রাদেশিক আদালতে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আবেদন করেন রানা। কোথাও সুরাহা হয়নি। সান ফ্রান্সিসকোর আপিল আদালতেও প্রত্যর্পণের পক্ষেই রায় গিয়েছে। এ বার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টও রানাকে প্রত্যর্পণের অনুমতি দিল।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টারে আটক রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর সে সুপ্রিম কোর্টে একটি ‘সার্টিওরারি’ রিট আবেদন করে। তবে আদালত সংক্ষিপ্ত এক রায়ে জানায়, “পিটিশন ডিনাইড।” অর্থাৎ আবেদন খারিজ করা হচ্ছে।
এর আগে, রানা সান ফ্রান্সিসকোর নবম সার্কিট কোর্টসহ একাধিক ফেডারেল আদালতে আইনি লড়াই চালিয়েছিলে, কিন্তু প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সে পরাজিত হয়। এটি ছিল ভারতের কাছে তাকে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে তার শেষ আইনি সুযোগ।
তাহাউর রানা একজন প্রাক্তন পাকিস্তানি সেনা চিকিৎসক। কানাডায় অভিবাসনের পর শিকাগোতে একটি ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান চালাত। তার স্কুলজীবনের বন্ধু ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে মিলে সে ২৬/১১ মুম্বই হামলার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল।
রানা তার সংস্থার একটি শাখা খোলার অজুহাতে হেডলিকে ভারতীয় ভিসা পেতে সাহায্য করে। হেডলি সেই ভিসা ব্যবহার করে মুম্বই হামলার নজরদারি ও পরিকল্পনা করেছিল। ২০০৯ সালে হেডলির গ্রেফতারের পর রানার এই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসে। ২০১১ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রানা তার সংস্থার একটি শাখা খোলার অজুহাতে হেডলিকে ভারতীয় ভিসা পেতে সাহায্য করে। হেডলি সেই ভিসা ব্যবহার করে মুম্বই হামলার নজরদারি ও পরিকল্পনা করেছিল। ২০০৯ সালে হেডলির গ্রেফতারের পর রানার এই ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসে। ২০১১ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রানার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারত বহুদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিল। ২০২০ সালে ভারত পুনরায় এই বিষয়ে আবেদন করে। এবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ভারতের কাছে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মুম্বই হামলায় ১৬৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। এই সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রকারী রানার প্রত্যর্পণ ভারতে এই ঘটনার বিচার প্রক্রিয়ায় একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।