দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দুবছর পর ফের সশরীরে শহিদ দিবস। ধর্মতলায় তৃণমূলের ঐতিহাসিক সমাবেশ। যা নিয়ে কর্মী সমর্থকদের আবেগ একটু বেশিই। শীর্ষনেতাদের দাবি, আগের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বাইশের একুশে জুলাইতে। এবার একুশের সভায় দলনেত্রী কী বার্তা দেন শোনার অপেক্ষায় রয়েছে ঘাসফুল শিবির। কিন্তু এরই মাঝে রাজ্য রাজনীতিতে যে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হল এবারের একুশের মঞ্চে কী চমক থাকতে চলেছে?
এরই মধ্যে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন বরুণ গান্ধী ও মানেকা গান্ধী । বৃহস্পতিবার সকালেই শহরে পা দিয়েছেন তাঁরা। এই খবর চাউর হতেই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। তাহলে কি একুশের মঞ্চে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা?
যদিও এ ব্যাপারে তৃণমূল সূত্রে সকাল দশটা পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে এমন দিনে বিজেপির এই দুই সাংসদ কলকাতায় পা রেখেছেন, তাতে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
মানেকা গান্ধী ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর থেকে জিতেছিলেন। ছেলে বরুণ জিতেছিলেন পিলিভিট থেকে। বৃহস্পতিবারের বারবেলায় যদি সত্যিই গান্ধী পরিবারের মা-ছেলে তৃণমূলে সামিল হন তাহলে যোগীরাজ্যের বিজেপিতেও ভাঙন ধরিয়ে দিতে পারবে তৃণমূল।
গত কয়েক মাস ধরেই বরুণ গান্ধী কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব। শুধু তাই নয়, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে এমন সব মন্তব্য করতেন সঞ্জয় গান্ধীর পুত্র তাতে জাতীয় রাজনীতিতে এই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, বিজেপি টিকিট দেবে তো?
কেন্দ্রীয় বিজেপি অবশ্য টিকিট থেকে বঞ্চিত করেনি মা-ছেলেকে। গেরুয়া শিবিরের টিকিটে জিতেছিলেন দু’জনই। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বরুণ। সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে অতিরিক্ত জিএসটি চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাহুল গান্ধীর থেকেও ঝাঁঝাল আক্রমণ শানিয়েছিলেন। আর এদিন যখন বিজেপি বিরোধী স্বর আরও সপ্তমে তুলতে জমাট বাঁধছে ধর্মতলা তখন কলকাতায় পৌঁছলেন মানেকা এবং বরুণ গান্ধী।
একুশের নির্বাচনের আগে যে যোগদান মেলা বিজেপি শুরু করেছিল তা একুশের নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে সেটাই ব্যুমেরাং হয়ে উঠেছে। একাধিক বিধায়ক–সাংসদ থেকে নেতা–কর্মীরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
আর আজ একুশে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের হাইভোল্টেজ শহিদ দিবস। সেখানে কোন হেভিওয়েট শিবির বদল করবেন? এই প্রশ্নেই আপাতত তোলপাড় চলছে গেরুয়া শিবিরে। জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। তিনি বলেছেন, ”একুশের মঞ্চে যা চমক থাকবে, দেখতে পারবেন।”
বুধবার ধর্মতলায় সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চমক মানেই কি যোগদান, একটু অপেক্ষা করুন, রাত পোহালেই দেখতে পাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা যা বলবেন সেটাই তো চমক! কিন্তু এতে কি আর কৌতুহল মেটে? নেতা, নেত্রীরা এ নিয়ে কোনও উত্তর না দিলেও দলের অন্দরে কান পাতলে উঠে আসছে বেশ কিছু নাম।
কয়েক দিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আসা শোভন চট্টোপাধ্যায় হলেন সেই নামের ‘নর্ম্যাল চয়েজ’। তবে আজ সকাল দশটা পর্যন্ত এ নিয়ে কেউ কোনও মুখ খোলেননি। তাই সময়ের অপেক্ষা, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই হবে জল্পনার অবসান।