দেশের সময় ওয়ের ডেস্কঃ ব্রিগেডের মঞ্চে ‘খেলা হবে’–র পাল্টা স্লোগান তুলে তৃণমূলকে বিঁধতে দেখা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীকে। পুরুলিয়ার সভাতেও সেই ‘খেল খতম’ স্লোগান শোনা গেল তাঁর মুখে।
বাংলার ‘স্লোগান–রাজনীতি’র ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রেখে গেরুয়া শিবির একের পর এক স্লোগান আমদানি করে চলেছে একুশের ভোটে। কখনও ‘সো(সু)নার বাংলা’, আবার কখনও ‘আসল পরিবর্তন’। কিন্তু ঘাসফুল শিবিরের ‘খেলা হবে’ স্লোগানের পাল্টা ‘ক্যাচলাইন’ খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে পদ্মশিবিরকে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি কোনও কিছুর ধার না ধেরে ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলেই ভাষণ গরম করার চেষ্টা করেছেন আগে। ব্রিগেডে ‘ম্যাজিক হবে’ স্লোগান তুলতেও দেখা গেছে নেত্রী লকেট চ্যাটার্জিকে। কিন্তু সেদিনই বঙ্গ বিজেপি নেতাদের নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ‘খেলা হবে’–র দাওয়াই ‘খেলা শেষ’–ই।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাটমানি, কমিশন, তোলাবাজির অভিযোগ তুলে এদিন মোদী বলেন, ‘টিএমসি মানেই ট্রান্সফার মাই কমিশন। এখানে চালু হয়নি আয়ূষ্মাণ ভারত। টাকা যায়নি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। দিদি বলেন, খেলা হবে। এবার খেলা শেষ হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলেই হাসপাতাল হবে, স্কুল হবে। চালচোরেরা খেলা চালিয়ে যাক। আমরা ক্ষমতা এলেই সব খেলা শেষ। চুরির খেলা আর চলবে না। কেন্দ্রের পাঠানো চাল মানুষের কাছে পৌঁছবে।’
‘আসল পরিবর্তন’–তুলে ধ্বনি তুলে বাংলাকে কুশাসন থেকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির ‘নীচুস্তরের’ নেতাদের সুরে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করুন। গণতন্ত্রকে জিইয়ে রাখুন।
২ মে বিজেপি ক্ষমতায় এলেই রাজ্যে আইনের শাসন স্থাপন করা হবে। অপরাধীরা অবশ্যই সাজা পাবেন।’ তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ভোটের প্রচারে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের কাজে লাগানোর অভিযোগ বহুবার তুলেছে বিজেপি। এদিন ওই রাজ্য সরকারি কর্মীদেরও বার্তা দিতে দেখা গেল মোদীকে। বলেন, ‘রাজ্য সরকারি কর্মীরা অনেক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাঁদের অসুবিধা দূর করা হবে।’
নন্দীগ্রামে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে ‘গুরুতর’ আঘাত পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁরে ‘ধাক্কা মেরে আহত’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পর থেকে হুইলচেয়ারেই নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছেন তিনি। এদিন কটাক্ষের সুরে মোদী বলেন, ‘দিদির যখন চোট লাগে, তখন আমারও কষ্ট হয়।’ আবারও বাংলার শাসকশিবিরের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘১০ বছর ধরে শুধুই তুষ্টিকরণের রাজনীতি করেছেন মমতা। উন্নয়ন হয়নি।
বাটলা হাউজ এনকাউন্টারের কাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিদি? পুলওয়ামা হামলায় কাদের সঙ্গ দিয়েছিলেন? মানুষ ভুলে যাননি।’
দলিত, আদিবাসীদের উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে পুরুলিয়ার সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতাকে বারবার বিঁধেছেন মোদী। তাঁর মুখে উঠে এসেছে সিধু–কানহু, রঘুনাথ মুর্মুদের প্রসঙ্গ। বলেন, ‘এই জেলার মানুষের সঙ্গে দিনের পর দিন অন্যায় হয়েছে। দিল্লি থেকেও আমরা আপনাদের সমস্যার কথা বুঝতে পারি। মা মাটি মানুষের সরকার আপনাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দলিত আদিবাসীদের প্রতি দিদির ভালোবাসা থাকলে তিনি এটা করতে পারতেন না। সবাই জানে কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়াদের কারা আশ্রয় দিয়েছে? ক্ষমতা দখল করতে কারা মাওবাদীদের মদত দিয়েছে?’