৯০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণী,ভর্তি দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে

0
800

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ৯০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয় তাঁকে।

হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট সুনীল গুপ্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, লখনউয়ের কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে প্রথমে ভর্তি ছিলেন দগ্ধ তরুণী। অবস্থা ক্রমে খারাপ হওয়ায় সফদরজঙে তাঁকে উড়িয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানেই ডাক্তার শালাব কুমারের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। নির্দিষ্ট একটি আইসিইউ তৈরি করা হয়েছে তাঁর জন্য। সফদরজং হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান শালাব কুমার জানিয়েছেন, ক্ষত বাড়ছে দ্রুত। তরুণীর অবস্থা ক্রমেই আশঙ্কাজনক হচ্ছে আরও বেশি।

২৩ বছরের ওই তরুণীর শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে আগুনে।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রের খবর, যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ করেছেন তরুণী, তাঁদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি তদন্ত কত দ্রুত, কী ভাবে এগোচ্ছে, তা বিশদে জানতে চেয়ে, জাতীয় মহিলা কমিশন রিপোর্ট চেয়েছে পুলিশের কাছে। নির্যাতিতার চিকিত্‍‌সার যাবতীয় খরচ রাজ্য সরকারই বহন করবে বলে ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছিল এই তরুণীকে। ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। বাকি দু’জন এখনও ফেরার। গত সপ্তাহে জামিনে ছাড়া পায় অভিযুক্তরা। অপরাধীদের যোগ্য শাস্তি দেওয়ার জন্য গর্জে উঠেছিলেন এই সাহসিনী। তারই ভয়ঙ্কর পরিণতি হল আজ। আরও এক নৃশংতার সাক্ষী হল দেশ। লজ্জায় মাথা নত হল উত্তরপ্রদেশের। উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করল ধর্ষণে অভিযুক্তরাই। রায়বরেলি আদালতে ধর্ষণ মামলার শুনানি চলছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে সেই ধর্ষণের মামলায় শুনানির জন্য তরুণী যখন আদালতে যাচ্ছিলেন, তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় পাঁচজন। তরুণী সেই সময় ছিলেন রেল গেটের কাছে। তাঁকে টেনে হিঁচড়ে পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানেই তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তরুণীর আর্তনাদে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। খবর যায় পুলিশে। তরুণীকে যখন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর শরীরের বেশিরভাগটাই পুড়ে গেছে।

ওই অবস্থাতেই হাসপাতাল থেকে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। নাম বলেছেন পাঁচ জনের। গ্রেফতারও হয়েছে তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টায় অভিযুক্ত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনই ধর্ষণে অভিযুক্ত। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেই তারা তরুণীর খোঁজে গ্রামের আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এদিনও আদালতে যাওয়ার নির্যাতিতার পিছু নেয় তারা। রেল গেটের কাছে নির্জন জায়গা দেখে সেখানেই তরুণীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে।

গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরে জ্বলন্ত অবস্থাতেই এক কিলোমিটারেরও বেশি পথ চিৎকার করতে করতে ছোটেন নির্যাতিতা। তার পরে ওই অবস্থাতেই এক জনের মোবাইল চেয়ে, তা থেকে ফোন করেন পুলিশকে। তার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছে উদ্ধার কর তাঁকে।

Previous articleএনকাউন্টার:কাকভোরে পুলিশের গুলিতে খতম হায়দরাবাদের চার ধর্ষক
Next articleYour Shot?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here