হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে,সঙ্গে নিয়েছে ফুরফুরার এক চ্যাংড়াকে : মমতা

0
1679

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির প্রতিটি সভাতেই ঢেলে ভিড় হচ্ছে। সেই ভিড়ের স্বতঃস্ফূর্ততার কাছে তৃণমূল-বিজেপির যুযুধান নেতাদের বহু সভাও ম্লান হয়ে যেতে পারে।

শনিবার রায়দিঘির সভায় সেই আব্বাসকেই নাম না করে ‘ফুরফুরার চ্যাংড়া’ বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


তাঁর কথায়, “হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে। সঙ্গে নিয়েছে ফুরফুরার এক চ্যাংড়াকে। ওরা কয়েক কোটি টাকা খরচ করে মুসলিম ভোট ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে। সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার চেষ্টা করছে। ওদের একটাও ভোট নয়। ওদের একটা ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া”।


মজার ব্যাপার হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আব্বাসও ঠিক এই কথাটাই বলছেন। তাঁর কথায়, বাংলায় বিজেপিকে ঢুকিয়েছে তৃণমূলই। মমতাই বিজেপির পরমবন্ধু। তাই তৃণমূলকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকেই ভোট দেওয়া। আর তৃণমূলকে হারানো মানে বিজেপিকে হারানো।

এবারের ভোটে আব্বাসকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না তৃণমূলের অনেকেই। তাঁদের ধারণা ছিল, ফুরফুরা শরিফের এই পীরজাদা কোনও প্রভাব ফেলতে পারবেন না। কিন্তু আব্বাস যে এই ক্যারিশ্মা দেখাবেন কে জানত! সংযুক্ত মোর্চার ব্যানারে আব্বাস যে সব সভা করছেন, তাতে সংখ্যালঘুদের ভিড় উপচে পড়ছে। কুড়ি-পঁচিশ মিনিটের টানটান বক্তৃতায় আব্বাস যেন সম্মোহিত করে ফেলছেন তাঁদের। ভিড়ের সঙ্গে সওয়াল জবাবের খেলা খেলছেন। নজর করার মতো ব্যাপার হল, সেই ভিড়ে আঠারো থেকে চল্লিশ বছরের তরুণ সংখ্যালঘুদের উপস্থিতিই বেশি। আব্বাস তাঁদের বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিমদের ধোঁকা দিয়েছেন।

ইমাম ভাতার নামে ভিক্ষা দিয়েছেন, কিন্তু ইমামের ঘরের শিক্ষিত ছেলেমেয়ের চাকরি হয়নি। মুসলিমরা শিক্ষায়, কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়েছে। মহরমের দিন দুর্গা ঠাকুরের ভাসান বন্ধ করে, ঘোমটা দিয়ে নমাজে বসে মমতা বাংলায় হিন্দু আর মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দিয়েছেন। তাঁর এই তুষ্টিকরণ উল্টে সর্বনাশ করেছে সংখ্যালঘুদের।

আব্বাসের ধারাবাহিক সভা-সমাবেশ যখন দৃশ্যত আন্দোলিত করে দিয়েছে অনগ্রসর মুসলিম যুবকদের তখন শনিবার এই প্রথম এতটা কড়া ভাষায় তাঁর সমালোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অঞ্চলের পর অঞ্চল, ব্লকের পর ব্লকে সংখ্যালঘুরাই তৃণমূলের ভোট বাক্সের মূল ভিত্তি বলে অনেকে মনে করেন। সেই ভিত শক্ত ভাবে ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এর অর্থ পরিষ্কার, আব্বাসদের নিয়ে তৃণমূলের উদ্বেগ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই যে চড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দিদি, তাতেই সেটা প্রমাণিত। নইলে আব্বাসদের হয়তো উপেক্ষা করত তৃণমূল। তবে তাঁরা এও মনে করছেন, ভিড় দেখে বর্তমান সময়ে ভোটের হিসাব সব সময়ে যে ঠিক বলা যায় তাও নয়। আব্বাসের জনপ্রিয়তা প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর সভার ভিড় সত্যিই সংযুক্ত মোর্চার ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হচ্ছে কিনা তা ২ মে বোঝা যাবে।

Previous articleএসএসকেএমে গুলি চলল, রক্তাক্ত কলকাতা পুলিশের এসআই, শুরু তদন্ত
Next article‘দিদি, হার স্বীকার করে নিন’,সিঙ্গুরকে ঠকিয়েছেন , কৃষিও নেই, চাকরিও নেই: মমতাকে ফের নিশানা মোদীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here