এক নজরে:
- দিন কয়েক আগে হাবড়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
- এবার তার পাশের অশোকনগরে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির।
- রাজ্যে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু। এবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগরের এক যুবকের। যার জেরে হাবড়া-অশোকনগরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে গত ১ মাসে মোট ৪ জনের মৃত্যু হল।
-
দিন কয়েক আগে হাবড়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এবার তার পাশের অশোকনগরে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। গত সপ্তাহ থেকে অসুস্থ ছিলেন জয়ন্ত পাল। মঙ্গলবার ইএম বাইপাস এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে জয়ন্তর মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেঙ্গি আতঙ্কে কাঁপছে গোটা হাবড়া অশোকনগর এলাকা। গত এক মাসে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে হাবড়ার ১০ জন বাসিন্দার। অশোকনগরের দুই বাসিন্দাও মারা গেছেন ডেঙ্গিতে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয় অশোকনগরের বাসিন্দা ২৯ বছরের তরুণ জয়ন্ত পালের। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গেছে. গত সপ্তাহে জ্বর হয়েছিল তাঁর। গত বৃহস্পতিবার অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার তাঁকে রেফার করা হয়। পরিবারের লোকজন রবিবার প্রথমে বারাসতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান তাঁকে। পরে নিয়ে যান কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন মঙ্গলবার গভীর রাতে মারা যান জয়ন্ত।
মঙ্গলবার মৃত্যু হয় হাবড়া পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের জয়গাছি এলাকার বাসিন্দা জয়দেব হালদারেরও। জানা গেছে. তিনদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাবড়া হাসপাতালে। আরজি কর হাসপাতালে রেফার করে দেন সেখানকার চিকিৎসকরা। নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
হাবড়া হাসপাতলে এই মুহূর্তে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ। জ্বরের রোগী ধরলে এই সংখ্যাটা আরও বেশি। তিনি বলেন, “প্রতিদিন যত জ্বরের রোগী আসছেন, তাঁদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমাদের পরিকাঠামো আরও বাড়ানো দরকার। আজ স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদল হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে বিষয়টা তাদের জানিয়েছি।”
হাবড়া হাসপাতালে জ্বর ও ডেঙ্গি রোগীরা সঠিক পরিষেবা পাচ্ছেন কি না দেখতে বুধবার দুপুরে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য দফতরের চার সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে রোগী ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পাশাপাশি হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষের সঙ্গেও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেকের ডায়েরিয়ার উপসর্গ থাকছে বলেও জানা গেছে।
এ দিন এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ডেঙ্গিতে মৃত জয়ন্ত পালের পরিবার। অশোকনগর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এলে ক্ষোভ জানান তাঁরা। প্রবোধবাবু বলেন, “আমাদের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি রুখতে সাফাই অভিযানে সামিল হয়েছি আমরা।”
মঙ্গলবার দিনভর হাবরা ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন খাল ও জলাশয় ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্য দফতর, সেচ দফতরের প্রতিনিধিদল। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা খতিয়ে দেখতেই এই পরিদর্শন বলে জানান তাঁরা। বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকে প্লাস্টিকের বালতিতে জমা জল, মাটির হাঁড়ি বা পরিত্যক্ত টায়ারের মধ্যে জমা জল দেখে সেগুলো পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন।