দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বুধবার সকালেও রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কোলাঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করে উমফানের দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
বিকেলে হঠাৎই রাজভবনে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার কিছু আগে রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী। যদিও নবান্নের তরফে বলা হয়েছে, এটা পুরোপুরো সৌজন্য সাক্ষাৎ।
তবে সংঘাতের আবহে এই বৈঠক নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। সন্ধে ছটা দশ মিনিট পর্যন্ত খবর, রাজভবনে বৈঠক চলছে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর।
Myself and Mrs Sudesh Dhankhar greeted Hon’ble Chief Minister @MamataOfficial when she visited Raj Bhawan today. pic.twitter.com/IsbEqedBHV
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 6, 2021
সন্ধ্যা ছটা ২৫ মিনিট নাগাদ রাজভবন থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি তিনি।
এর আগে একাধিকবার রাজ্যপাল অভিযোগ করেছেন, সরকারি অফিসারদের তিনি ডাকলেও তাঁরা আসছেন না। নবান্ন থেকে তাঁকে কোনও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, সমস্ত তথ্য রাজ্যপালকে দেওয়া হয়। একবার তো কবে কখন মেসেজ করেছিলেন তার দিনক্ষণ, সংখ্যাও বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি রাজ্যপালকে বিজেপির লোক বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এদিন সকালেও তৃণমূল মুখপাত্র রাজ্যপালকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “ওঁর আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করা উচিত।”
ফলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর রাজভনে যাওয়া নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন সেটাই দস্তুর। কিন্তু ধনকড় রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকে রাজভবন বনাম নবান্নের মধ্যে যে অদৃশ্য পাঁচিল উঠে গিয়েছে। সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ, টুইট যুদ্ধ চলেছে বা চলছে তা থেকেই এই বৈঠক অস্বাভাবিক ঠেকছে অনেকের কাছে।
এক দিনের পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়ে ধনখড় বলেন, ‘সংবিধানে উল্লেখিত ‘উই, দ্য পিপল’–এর অর্থ হল ভারতমাতার যে কোনও সন্তান এই দেশের কোনও জায়গাতেই বহিরাগত নন। পশ্চিমবঙ্গে অন্য রাজ্যের লোকজন এলে তাঁদের এখন বহিরাগত বলা হচ্ছে। এটা সংবিধানকে অপমান করার সামিল। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।’ উম্পুন ইস্যুতেও ধনখড়ের তোপ, ‘এই দুর্যোগের বিষয়ে সম্পূর্ণ পূর্বাভাস ছিল, তা সত্ত্বেও প্রস্তুত ছিল না রাজ্য সরকার। বিশেষ করে কলকাতা পুর প্রশাসন। করোনায় রাজ্যের খরচ নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে। মহামারী মোকাবিলায় ২ হাজার কোটি টাকার জিনিস কিনেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার কোনও হিসেব সরকারের কাছে নেই। রাজ্য পুলিশ প্রশাসনেও রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি।
এমন সংঘাতের আবহে হঠাৎ কেন রাজভবনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী, তা নিয়ে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিনও সাংবাদিক বৈঠকে যে ভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সুর চড়িয়েছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর একদিনের রাজভবন যাত্রায় সেই বিবাদ কমার নয় বলেই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।