দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ করে কলকাতায় বহু জায়গায় লকডাউনের শর্ত মানা হচ্ছে না বলে শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শনিবার সেই চিঠি ফাঁস হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। তার পর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠারেঠোরে অভিযোগ করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই চিঠি সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিতপূর্ণ। তিনি অবশ্য এও বলেন, যে সব জায়গায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নজর রাখতে বলেছে, সেখানে পুলিশ নজর রাখছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যকে চিঠি দিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার কিছু অনাবশ্যকীয় পরিষেবায় অনুমতি দিয়েছে। তার ফলে কলকাতার রাজাবাজার, নারকেলডাঙা, তপসিয়া, গার্ডেনরিচ, ইকবালপুর, মানিকতলা এলাকায় দেখা যাচ্ছে বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে। মাছ, মাংস, সবজির দোকানের সামনে ঠেলাঠেলি। সোশাল ডিস্টেন্সিংয়ের শর্ত সেখানে মানা হচ্ছে না। তাছাড়া কোথাও কোথাও ধর্মীয় সমাবেশ হচ্ছে বলেও নিরাপত্তা এজেন্সি জানিয়েছে। এ ব্যাপারে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের প্রসঙ্গ টেনে লকডাউনের শর্ত কঠোর ভাবে পালনের পরামর্শ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার পর রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছে।
শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে বলেন, “আপানারা যতটা বাড়িয়ে বলছেন, চিঠিতে ওরকম কিছু নেই। তবে হ্যাঁ কয়েকটা জায়গার উপর নজর রাখতে বলেছে”। এর পরেই ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আর আপনারা তো জানেনই যে কেন্দ্র কোথায় কোথায় বেশি নজর রাখার কথা বলতে পারে!” কারও নাম করেও কমিউনাল ভাইরাসের প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হল, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “লকডাউনের শর্ত রাজ্যে কঠোরভাবেই পালন করা হচ্ছে। কিন্তু তা করা হচ্ছে মানবিক মুখ নিয়ে। লকডাউন মানার ক্ষেত্রে জীবন ও জীবিকার কথাও মাথায় রাখতে হবে। আমি পুলিশকে বলেছি, কড়াকড়ি করুন, কিন্তু বাড়াবাড়ি করবেন না”।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন লকডাউনের ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা যে কমবে তা ঠিক। কিন্তু সমাজের প্রান্তিক মানুষগুলোর কথাও ভাবতে হবে। সাধারণ মানুষের সুবিধা অসুবিধার কথাও বুঝতে হবে। নইলে যন্ত্রের মতো লকডাউন করলে বহু মানুষ সমস্যায় পড়তে পারেন।