দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুলওয়ামা কাণ্ডের পর সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে নয়াদিল্লি যখন ইসলামাবাদকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে, তখন মঙ্গলবার রাতে নয়াদিল্লি এসে পৌঁছলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমান। এ দিন বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, কাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিতে পারেন সৌদির যুবরাজ।

প্রসঙ্গত, ভারতের আগে গত দেড় দিন ধরে ইসলামাবাদ সফরে ছিলেন মহম্মদ বিন সলমান। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠকের পর অর্থসংকটে জর্জরিত পাকিস্তানে কুড়ি বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ব্যাপারে সেখানে অঙ্গীকার করেন তিনি। এর আগে পাকিস্তানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণও দিয়েছে রিয়াধ। তবে নয়াদিল্লির বক্তব্য, সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাধীন ও সাবালক। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার ও সন্ত্রাসবাদ দমনের ব্যাপারে দু’দেশই অঙ্গীকারবদ্ধ। চলতি সফরে তা আরও এগোনোর ব্যাপারে আলোচনা হবে।

সাউথ ব্লক সূত্রে বলা হয়, মহম্মদ বিন সলমান খুবই প্রগতিশীল ব্যক্তি। ইসলামাবাদে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময়েই তিনি উপ মহাদেশে শান্তি কায়েম রাখতে সদর্থক পদক্ষেপ করার উপর জোর দিয়েছেন। কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে বৈঠকের পর সন্ত্রাস দমনে তিনি এতোটাই কঠোর বার্তা দেবেন যে ইসলামাবাদকে তা নিয়ে ভাবতে হবে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, গভীর কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য গোটা বিশ্বের আটটি দেশকে সৌদি আরব চিহ্নিত করেছে। তার মধ্যে ভারত অন্যতম। দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কাল একটি কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব সাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়াও সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক মজবুত করতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। সৌদি যুবরাজ সেই কারণেই শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারত সফরে এসেছেন।
কথায় বলে কূটনীতিতে শরীরের ভাষা বড় তাৎপর্য রাখে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে সৌদির যুবরাজকে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদী যে ভাবে আপ্যায়ণ করেছেন তার কূটনৈতিক ওজন কম নয়। সাধারণত, কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি ভারত সফরে এলে মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যকে বিমানবন্দরে পাঠানো হয় অভ্যর্থনার জন্য। খোদ প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরে চলে গেলে বোঝা যায়, সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক সুদৃঢ় করাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে সাউথ ব্লক। মঙ্গলবারও সেই ছবিটাই ধরা পড়ে। সৌদির যুবরাজ বিমান থেকে নামার পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে অভ্যর্থনা করে জড়িয়ে ধরেন
তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে সৌদি আরবের যুবরাজের ভারত সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্যও রয়েছে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে তাঁকে এদিন আলিঙ্গনে জড়িয়েছেন তার মধ্যেও কোথাও একটা বার্তা নিহিত রয়েছে। হতে পারে দেশের সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে কোনও বার্তা দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। আস্থার সম্পর্ক বাড়াতে চান তাঁদের সঙ্গে। সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর বার্তা শোনানোর পাশাপাশি আগামী কালের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বা তিল তালাক প্রথা রদ করতে অর্ডিন্যান্স জারি করা,- এসবই বৃহত্তর কোনও রাজনীতির কৌশল হতেই পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here