দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এখন ‘গোল্ডেন গার্ল’ বলেই ডাকা হচ্ছে লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গীকে। অম্বালা বায়ুসেনা ঘাঁটির ১৭ নম্বর গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াড্রনের ফাইটার পাইলট হতে চলেছেন তিনি। এই গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াড্রনেই কিছুদিন আগে রীতিমতো আড়ম্বরের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফ্রান্স থেকে কেনা পাঁচ রাফাল ফাইটার জেট। ফের একবার ইতিহাস লিখতে চলেছে অম্বালা গোল্ডেন অ্যারো। প্রথমবার রাফালের মতো দুর্ধর্ষ ফাইটার জেট ওড়াবেন এক মহিলা এয়ার ফাইটার পাইলট। চিনের পঞ্চম প্রজন্মের জে-২১ চেংড়ু যুদ্ধবিমানের মোকাবিলা করতে পারে ফরাসি রাফাল। মিসাইল ছোড়ার প্রযুক্তিও আছে রাফালের। গর্বের সঙ্গে এমন যুদ্ধবিমানের ককপিটের হাল ধরবেন শিবাঙ্গী।
মিগ-২১ বাইসন জেট ওড়াতে দক্ষ। বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের সঙ্গে একই এয়ারবেসে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দক্ষ, সাহসী অফিসার অভিনন্দনের সঙ্গে মিগ ফাইটার জেট ওড়ানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে। আকাশে দীর্ঘক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ে চক্কর কাটতে পারেন বায়ুসেনার এই দক্ষ পাইলট। নাম শিবাঙ্গী সিং। ফরাসি রাফাল ফাইটার জেটের তিনিই প্রথম মহিলা পাইলট হতে চলেছেন।
বারণসীর মেয়ে শিবাঙ্গী। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক করেন। ক্যাডেট কোর (এনসিসি)-এর ৭ নম্বর ইউপি এয়ার স্কোয়াড্রনে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমিতে যোগ দেন।
বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার পরে মিগ-২১ বাইসন জেটেই প্রশিক্ষণ নেন শিবাঙ্গী। মিগ-২১ বাইসন জেট ওড়ানো বড় কম কথা নয়। এই মিগ উড়িয়েই পাকিস্তানের এফ-২১ জেটের পিছু ধাওয়া করেছিলেন বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। শিবাঙ্গী অভিনন্দনের সঙ্গেও মিগ জেট উড়িয়েছেন। মিগের পুরনো ও নতুন দুই ভার্সনেই দক্ষ লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী। এতদিন রাজস্থানে পোস্টেড ছিলেন। সেখান থেকে অম্বালায় নিয়ে এসে তাঁকে রাফালের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
২০১৭ সালে প্রথমবার মিগ বাইসন জেটের ককপিটে বসে নজির গড়েছিলেন অবনী চতুর্বেদী। ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম এয়ার পাইলট যিনি মিগ-২১ বাইসন জেট উড়িয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার মিগ উড়িয়ে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন এয়ার ফাইটার পাইলট ভাবনা কান্থ। শিবাঙ্গী জানিয়েছেন তিনি দক্ষ বায়ুসেনা অফিসার অবনী চতুর্বেদী, ভাবনা কান্থ ও মোহনা সিংকে অনুসরণ করেন৷
সমুদ্র ও আকাশে বৈষম্যের সীমা ভেঙেছে। নারী ও পুরুষে ভেদাভেদ না করে দক্ষতা ও সাহসের ভিত্তিতেই দক্ষ অফিসারদের বেছে নেওয়ার রীতি শুরু হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রথম মহিলা পাইলটের দায়িত্ব পেয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী স্বরূপ। সম্প্রতি যুদ্ধজাহাজেও মহিলা লেফটেন্যান্ট অফিসারদের নিয়োগ করা শুরু হয়েছে। সে দায়িত্ব পেয়ে নজির গড়েছেন সাব লেফটেন্যান্ট কুমুদিনী ত্যাগী ও সাব লেফটেন্যান্ট রীতি সিং।
বছর কয়েক আগেই যুদ্ধবিমান ওড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন মহিলা এয়ার ফোর্স অফিসারেরা। প্রশংসার বন্যা বয়েছে সারা দেশে। ২০১৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এক মহিলা অফিসার। নজির তৈরি হয়েছিল সেবার। প্রথম মহিলা ফ্লাইট কম্যান্ডার হিসেবে যোগ দিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন শালিজা ধামি। গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসের প্রথম মহিলা ফ্লাইট কম্যান্ডারও ছিলেন শালিজা। দেখিয়ে দিয়েছিলেন মহিলারা চাইলে যুদ্ধবিমানের ককপিটেরও হাল ধরতে পারেন দক্ষতার সঙ্গেই।