দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃবুধবার হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। আর শনিবারেও কলকাতার বহু এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। মিলছে না পানীয় জল। বিদ্যুতের অভাবে মোটর চালিয়ে রাস্তায় জমে থাকা জলও সরাতে পারছে না পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ বাড়ছে শহরের। এদিন সেই ক্ষোভের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিইএসসি একটি বেসরকারি সংস্থা। এর জন্য সরকারকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। তিনি এমনও বলেন যে, সিপিএমের আমলে কেন্দ্রীয় সরকার ওই বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। বর্তমান সরকার এই দায়িত্ব দেয়নি।
ঝড়ের পর ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন কেন এনিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলিও। এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও এনিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সরব হন। এর পরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “সিইএসসি একটি প্রাইভেট সংস্থা। সিপিএম আমল থেকেই কাজ করছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করা উচিত নয়।” তিনি আরও বলেন, “করোনার কারণে সিইএসসির বহু কর্মী বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কর্মীর অভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। বাস্তব সমস্যাটাও মানুষকে বুঝতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। যারা উস্কানি দিচ্ছে তাদেরও সেটা বন্ধ করতে হবে।”
ঘূর্ণিঝড় আমপানের দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে সিইএসসি। কিন্তু আগামী মঙ্গলবারের আগে কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় একমাত্র বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা। আর এতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই তিনি এনিয়ে সিইএসসি-র কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে একাধিকবার কথাও বলেছেন বলে এদিন জানিয়েছেন। সিইএসসি-কে প্রয়োজনে জেনারেটর ভাড়া করে কাজ করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শনিবার কাকদ্বীপে বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সিইএসসিকে আমি বলেছি, যতক্ষণ না পুরোপুরি স্বাভাবিক করা যাচ্ছে ততদিন ১৫০টা জেনারেটর ভাড়া করুন। এটা আমি বুদ্ধি দিয়েছি। এটা বিভিন্ন অঞ্চলে লাগান। যেসব জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ নেই সেখানে যেন মানুষ কিছুটা বিদ্যুৎ, কিছুটা জল পায় সেই ব্যবস্থা করুন।”
বিদ্যুতের অভাবে শহরজুড়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষমা চেয়েছে সিইএসসি। সংস্থার ভিপি ডিস্ট্রিবিউশন অভিজিৎ ঘোষ বলেন, “গ্রাহকদের অসুবিধা হচ্ছে। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু পর্যাপ্ত কর্মী না থাকার কারণে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা যাচ্ছে না। লকডাউনের কারণে অনেক কর্মীকে আনা যায়নি।” সিইএসসির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎহীন আবাসনের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। পুরসভাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সিইএসসি।