দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ ২০২৪-এর সলতে পাকানোর কাজ এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসও মমতাকে জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী মুখ হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া। ঠিক এই আবহেই বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে এই প্রশ্ন সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন তৃণমূলনেত্রী।
এদিন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ২০২৪-এর লক্ষ্যে বিরোধী জোটের বার্তা আপনি দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে?
জবাবে মমতা বলেন, আমি তো জ্যোতিষী নই! তবে হ্যাঁ আমরা চাই বিজেপিকে হঠানোর জন্য দেশে সামগ্রিক বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে। সেখানে কার হাতে নেতৃত্ব থাকল সেটা বড় কথা নয়। এটা দেশ বাঁচানোর লড়াই।
তৃণমূলের স্বপ্ন ২০২৪-এর ১৫ অগস্ট লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তুলবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সংসদীয় দলের বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চাই। এখন দেশের মধ্যে তিনিই বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের প্রধান মুখ। তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি-কে হঠানো সম্ভব। দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আমরা সব সাংসদ মিলে সেই প্রস্তাবই দিয়েছি। আমরা তাঁর নেতৃত্বেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে উৎখাত করতে চাই।’
লোকসভা নির্বাচনের আগে যে তিনি বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনগুলিকেও পাখির চোখ করেছেন, তা মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ দিনও সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।কোভিড সঙ্কট মিটে গেলে আমরা বৈঠক করতে পারি।’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪ পর্যন্ত অপেক্ষা করা নয়৷ উত্তর প্রদেশে বিজেপি-র বিজয়রথ থামিয়ে দেওয়াই তাঁর প্রধান লক্ষ্য৷ আর উত্তর প্রদেশে বিজেপি-কে হারাতে গেলেও যে বিরোধী দলগুলির একজোট হওয়া প্রয়োজন, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সোনিয়া গান্ধীও বিরোধী ঐক্য চাইছেন। এখন অন্য দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।’ তবে বিরোধী জোট গঠনের কাজে তাড়াহুড়ো চান না তৃণমূলনেত্রী৷ বরং সবার মতামত নিয়েই এগনোর পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মমতাকে যে তৃণমূল জাতীয় স্তরে বিরোধী মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে তা বেশ কয়েকদিনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। একুশের মঞ্চে একা মমতার দীর্ঘ বক্তৃতা, আগামী কাল ২৮ জুলাই বঙ্গভবনে বিরোধী নেতাদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো—এসব ঘটনাতেই তৃণমূলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে মমতা নিজে মুখে নেতৃত্বের ব্যাটন হাতে নেওয়ার কথা বলেননি। তা বলা তাঁর পক্ষে সমীচীনও ছিল না। তাই তিনি নিজে ঐক্যের বার্তা দিলেও দলের তরফে বলা হল, তাঁরা মমতাকেই মুখ হিসেবে চান।