দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শুভেন্দু অধিকারী সহ যে নেতারা গত শনিবার মেদিনীপুরের মাঠে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের আজ সংবর্ধনা দেবে বিজেপি। হেস্টিংসে দলের ভোট কার্যালয়ে তার আয়োজন করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু তার আগেই তুলকালাম কাণ্ড বেঁধে গেল হেস্টিংস চত্বরে।
বিজেপিতে যোগ দেওয়া বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল পার্টি অফিসে ঢোকার মুখে তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। হাতে ঘাস ফুলের ঝাণ্ডা নিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন তাঁরা। দেখানো হয় কালো পতাকাও। এরপর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
প্রাথমিক ভাবে অবস্থা সামলাতে চেষ্টা করেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পারেনি হেস্টিংস থানার পুলিশ। কারণ, এমন বিক্ষোভ যে হতে পারে, তার আগাম কোনও আঁচ ছিল না। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে তারা। তবে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। বাড়তি পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে৷
শনিবারের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা শুভেন্দু সহ মোট ৪৩ জনের। ততক্ষণে ওই দফতরে একে একে এসে পৌঁছতে শুরু করেছেন সাংসদ অর্জুন সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা। এসেছেন তথাগত রায়ও। তার কিছুক্ষণ আগেই দফতরে ঢুকে গিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষরা। কিন্তু তখনও এসে পৌঁছননি শুভেন্দু। অর্জুন-লকেট-তথাগতরা প্রত্যেকেই ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা’র নিন্দা করেন। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের ‘মদতে’ই গোটা ঘটনাটা ঘটেছে। তৃণমূলের ওই বিক্ষোভ সভার কোনও পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল না। বিজেপি-র বৈঠক আছে বলেই ওই সভা করা হয়েছে। যাতে বিজেপি-র বৈঠকের আগে ‘পরিকল্পিত ভাবে’ বিক্ষোভ দেখানো যায়। বস্তুত, তাঁরা শনিবারের ঘটনাকে জেপি নড্ডার কনভয় যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে সভা করে ‘প্ররোচনা’ এবং পর্যায়ক্রমে হামলার ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন৷
এ দিন সকালে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য সাংসদ সুনীল মণ্ডল হেস্টিংস-এ পৌঁছন৷ তাঁর গাড়ি বিজেপি অফিসের কাছে যেতেই পথ আটকান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা৷ রাস্তায় শুয়ে পড়ে সাংসদের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হয়৷ এই ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন বিজেপি কর্মীরা৷ দু’ পক্ষে শুরু হয় হাতাহাতি৷ কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ৷ দু’ পক্ষকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশবাহিনী৷
পুলিশের সাহায্যে কোনওক্রমে সাংসদকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় বিজেপি অফিসের ভিতরে৷
এই ঘটনার জন্য পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দায়ী করেছেন বিজেপি নেতারা৷ তৃণমূল ভয় পেয়েই এমন করছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়৷ পাল্টা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সুনীল মণ্ডল দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করাতেই তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা৷ তাঁর আরও প্রশ্ন, বিজেপি-তে যাওয়ার আগে কেন সাংসদ পদ ছাড়লেন না সুনীল কুমার মণ্ডল?
এ দিন সকাল থেকেই হেস্টিংসে বিজেপি অফিসের সামনে সভার আয়োজন করে তৃণমূল৷ বাজানো হয় গান৷ যার জেরে উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা ছিলই৷ তার পরেও পুলিশ কেন আগাম সতর্ক হল না, সেই প্রশ্ন উঠছে৷ ঘটনার পর অবশ্য পুলিশ সতর্ক হয়৷ গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় তৃণমূলের সভাস্থল৷ যাতে সেখান থেকে কেউ বিজেপি দফতরের দিকে এগোতে না পারে৷ বাড়ানো হয় পুলিশের সংখ্যাও৷