দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের কারণে ব্যবসার ক্ষতি যত কম করা যায়, সেদিকেই নজর দেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার বণিকসভার বৈঠকে তাই তিনি অনুমতি দিলেন দিনে ৩ ঘণ্টা করে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখতে। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা খোলা রাখা যাবে হোটেল-রেস্তোরাঁ। সেই সঙ্গেই অনলাইনে আরও বেশি কাজ চালানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, যত দ্রুত সম্ভব টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে কর্মীদের।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “আমরা ব্যবসা বন্ধের পক্ষে নেই। কিন্তু এমন কিছুও আমরা করব না, যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে চলে যাবে। হোটেলগুলি নিজেদের কর্মীদের টিকা দিক। হোটেল বন্ধ হোক আমরা চাই না। আপনারা নিজেদের কর্মীদের টিকা দিন। আপনারা অনলাইনে ব্যবসা বাড়ান। মিষ্টির দোকান ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা। হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিকেও তো ওই সময়ে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। ৫ থেকে ৮টা পর্যন্ত হোটেল রোখা যাবে। কর্মীদের টিকা দিয়ে চালান। কোভিড বিধি মেনে চলুন।”
একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মনে করিয়ে দেন, “অন্যান্য রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। আমরা সেটা করিনি। কার্ফু করিনি। আমরা কিছু বিধিনিষেধ করেছি। ব্যবসার কথা মাথায় রেখেছি। সকাল ৭টা থেকে ১০ পর্যন্ত দোকানবাজার চলছে। ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত শাড়ি-সহ অন্যান্য দোকান চলছে। মিষ্টির দোকান ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা। একেবারে পুরো বন্ধ নয়। যতটা সম্ভব খুলে রেখেছি। নির্মাণ সংস্থাগুলিকে নিজেদের জায়গায় শ্রমিকদের রাখতে পারে।”
তবে ব্যবসায় অনুমোদন দিলেও, ভ্যাকসিনের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, শিল্পসংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের টিকা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে ভ্যাকসিন কিনে নিতেও বলেন তিনি, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কো-অর্ডিনেশন করার নির্দেশও দেন।
পাশাপাশি পরিচারিকাদের টিকার প্রয়োজন, ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের টিকা দিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে। পাশাপাশি পরিচারিকাদের টিকা দেওয়ার বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে। আটা মিল রাইস মিল এবং রেশন দোকানের কর্মীদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে টিকা। তবে এখনই সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে না জামা কাপড়ের দোকান।
তিনি সরকারের তরফে টিকাকরণ নিয়ে বলেন, “ভ্যাকসিনে যত টাকা ছিল, খরচ করেছি। ১.৪ কোটি লোককে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। সুপার স্প্রেডার হকার, সবজি বিক্রেতা, গাড়ির চালকদের দিচ্ছি টিকা। শিল্পসংস্থাগুলিও আপনাদের শ্রমিকদের টিকা দিন। ওই টিকা আপনাদেরই কিনতে হবে। আপনারা ধরে নিন, ওই টিকা আপনারা রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলার ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন।”
১৬ জুন থেকে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে শপিংমল খোলার অনুমতিও দিয়ে দিতে পারেন বলে আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড বিধি মেনে চলার কথাও মনে করিয়ে দেন। তার পরের ধাপে ছোট দোকানও খোলার অনুমতি মিলতে পারে, বেলা ১২টা থেকে ৪টে।