দেশেরসময় ওয়েবডেস্ক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপির সঙ্গে এক সারিতে ফেলে বৃহস্পতিবার রানি রাসমণি রোডে কৃষক সমাবেশের মঞ্চ থেকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুবোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর কথায় এই সমাবেশ শেষ নয,বরং শুরু৷প্রতিটি জেলায় সমাবেশ করতে হবে। পরবর্তী কর্মসূচি উত্তর কন্যা অভিযান| ৷এদিন সিঙ্গুর থেকে কলকাতা লংমার্চের রাজভবন অভিযানকে সফল করতে জনসভার আয়োজন করা হয়। প্রধান বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র সিঙ্গুরের জমিকেচাষযোগ্য করা ,ফসলের ন্যয্য দাম,ব্যাঙক ঋণমকুব, শস্যবিমা চালু ও খেতমজুরদের ন্যূনতম দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিকে সমর্থন করে,সরাসরি তৃণমূল ও বিজেপিকে তাদের ভ্রান্ত নীতির বিরুদ্ধে সর্বস্তরে আন্দোলন জারি রাখার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে শিল্পের বাধা। রাজ্য শিল্প কোথায়? বিজেপির রথ যাত্রা ও তৃণমূলের পবিত্র যাত্রাকে কটাক্ষ করে সূর্যকান্তর তির্যক মন্তব্য, এটা বিজেপি আর তৃণমূলের ভোট যাত্রা। ক্ষমতা থাকলে বিজেপির রথ রুখে দিন। আগামী ৩ ফেব্রয়ারি ব্রিগেডে ওই দুই দলের থেকে বেশি মানুষ সভায় আসবেন। উল্লেখ্য, সিপিএমের শাখা সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভা ও খেতমজুর সংগঠনের ডাকে সিঙ্গুরের রতনপুর থেকে বুধবার সকাল ১১টায় কলকাতা অভিমুখে লংমার্চ শুরু হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় ডানকুনিতে প্রথম দিনের যাত্রা শেষ হয়। আজ,বৃহস্পতিবার বালি থেকে হাওড়া হয়ে কৃষক র্যালি কলকাতায় পৌঁছায়। পদযাত্রাকে স্বাগত জানাতে চলার দু’পাশে অসংখ্য মানুষ ফুল ও লাল পতাকা নেড়ে পদযাত্রীদের উৎসাহিত করেন। যাত্রা শুরুর সময় ১৮ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন, হাওড়ায় পৌঁছে সেই সংখ্যা ৫০হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে কৃষক নেতাদের দাবি। বাস্তবিক হুগলি ছাড়াও,হাওড়া,নদিয়া, উত্তর ও দাক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে হাজার হাজার বাম সমর্থকরা এদিন রানি রাসমণি রোডের সভায় হাজির হয়েছিল। বহুদিন পর কয়েক ঘণ্টার জন্য কলকাতা শহর কার্যত দখল নিয়েছিল কালো মাথার সারি আর লাল ঝান্ডা। সভা থেকে কৃষক সভার হুগলি জেলার কৃষক সভার সম্পাদক ভক্তরাম পান ও খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে কৃষকদের দাবি সম্বলিত স্বারকলিপি জমা দেন।সিঙ্গুর শিল্প বিকাশ সমি তির সভাপতি উদয়ন দাস বলেন, কেবল ,সিঙ্গুর নয়, গোটা বাংলার মানুষ বুঝতে পেরেছেন,রাজ্যের মা-মাটি-মানুষের সরকার তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছ৷ তাই,মানুষ পুনরায় জেগে উঠেছেন। বৃহস্পতিবারের লংমার্চে এই ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি তারই সাক্ষ্য বহন করছে৷ এককথায় রাজ্যে বিরোধী রাজনীতির পরিসরে বামেরা ক্রমে বিজে পির থেকে পিছিয়ে পড়েছিল। এদিনের এই বিপুল জমায়েত নিঃসন্দেহে বাম নেতাদের অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণকংগ্রেস সিপিএম এর এই জমায়েতকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মন্তব্য ,বামেরা জন বিচ্ছিন্ন, বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের সঙ্গে রয়েছেন৷ আগামী লোকসভা নির্বাচনে তা আবারও প্রমাণিত হবে৷কারণ দিল্লিতে সরকার গড়তে তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা থাকবে৷ অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সিপিএম এর সভা প্রসঙ্গে কটাক্ষ্,যারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারে না তারা আবার ঘুরে দাঁড়াবে এটা হাস্যকর’ ৷ বাংলায় মূল লড়াই বিজেপির সাথে তৃণমূলের,সেখানে শেষ হাসি হাসবে বিজেপি’ ৷