দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় আমপান ধেয়ে আসছে রাজ্যের দিকে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী হাওড়ার উপর দিয়েও ১৯০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সতর্কতামুলক পদক্ষেপ করতে শুরু করে দিয়েছে রেলও। মানুষকে নিরাপদ রাখা যেমন জেলা প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ,তেমনই দুর্ঘটনা রুখে দিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তৎপর হয়েছেন রেলকর্মীরা।
রেললাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকে একাধিক ট্রেন। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে যাতে এগুলি এগিয়ে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনা না হয় তার জন্য সকাল থেকেই সতর্ক রেল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখায় স্টেশন ও ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনগুলির চাকা চেন তালা দিয়ে বেঁধে ফেলছেন রেলকর্মীরা। এর আগেও ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সঙ্কেত পেয়ে এভাবেই ট্রেনের চাকা লাইনের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধেছেন রেলকর্মীরা। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। সকাল থেকেই চলছে এই কাজ।
ঘুর্ণিঝড় আমপানের মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই চব্বিশ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু করে দিয়েছে হাওড়া পুর নিগম। হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৬৩৭১৭৩৫। পুর এলাকার সমস্ত বরো অফিস ও বালির সাব-অফিসগুলিতে ২৪ ঘণ্টা এই কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। সমস্ত বরো অফিস এবং বালির সাব অফিসগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পরিচালনার দল তৈরি করা হয়েছে। সমস্ত বিপজ্জনক গাছ, বিপজ্জনক বাড়ি ও হোর্ডিংয়ের দিকে নজর রাখবেন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা। ফেসবুক ও ট্যুইটারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত গ্যাসকাটার রাখা হয়েছে। শাটার ও গ্রিলের মতো ধাতব জিনিস কাটার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
হাওড়া পুর এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় বর্ষাকালে জল জমতে দেখা যায়। অনেক জায়গাতেই নিকাশি নালা কার্যত বন্ধ। তাই কোথাও জল জমে গেলে তা দ্রুত বের করে দেওয়ার জন্য বিশেষ পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুর এলাকায় টিকিয়াপাড়া, রামরাজাতলা, বেলগাছিয়া প্রভৃতি এলাকায় জল জমার সমস্যা রয়েছে।
দুর্যোগের মাত্রা বেশি হলে প্রয়োজনে মানুষজনকে সরানোর জন্য নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের প্রয়োজন। সেগুলিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ ও খাবার জায়গায় জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংবেদনশীল এলাকায় মাইকের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়ে গেছে।
হাওড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় আমপানের প্রভাবে ইতিমধ্যেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চল – দুই জায়গাতেই বৃষ্টি হয়েছে। তবে তা স্থায়ী হয়নি। গ্রামীণ হাওড়াতেও মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। বুধবার জেলার জুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে।