দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন। স্থলপথে বৈদেশিক বাণিজ্যও বন্ধ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে। দেশের অন্য সব সীমান্ত বন্ধ থাকলেও শনিবার কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে শুরু হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য। কোন যুক্তিতে এই সীমান্ত খুলল তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জানা গেছে যে পাটের বীজ বাংলাদেশে পাঠানোর জন্যেই খুলেছে সীমান্ত। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়।
করোনার সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য পাটবীজের লরিগুলিকে বাংলাদেশ যেতে বাধা দিচ্ছেন স্থানীয় লরিচালকরা। তাঁদের বক্তব্য, যাঁরা লরি নিয়ে যাবেন তাঁরা যদি কোনও ভাবে বাংলাদেশ থেকে সংক্রমণ নিয়ে আসেন তখন এদেশে তাঁদের মধ্যেও নভেল করোনাভাইরাসের. সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই স্থানীয় লরিচালকরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। তাঁদের অসন্তোষ আটকাতেই সীমান্তে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত খোলা নিয়ে অবশ্য কেউ কোনও মন্তব্য করছেন না।
কোচবিহারে জেলাশাসক পাবেন কর্ডিয়ান জানিয়েছেন যে পাটের বীজ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যাপারে নির্দেশ এসেছে। সেই কারণেই এই গাড়িগুলি বাংলাদেশে যাচ্ছে।
যেখানে দেশের অন্য সব সীমান্ত বন্ধ সেখানে কী করে বাংলাদেশের একটি সীমান্ত খুলে দেওয়া হল তাই নিয়ে বিভ্রান্তিও ছড়িয়েছে।
পাটের বীজ বোঝাই করা গাড়ি সীমান্তে আসার পরেই অন্য গাড়িগুলিও সীমান্তে চলে আসে। শুরু হয় বচসা। স্থানীয় গাড়ির চালকরা প্রশ্ন তুলেছেন কী ভাবে লকডাউনের সময় বিশেষ কয়েকটি গাড়িকে বাংলাদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল। গাড়ির চালকদের বক্তব্য অনুযায়ী পুলিশ এসে তাঁদের জানিয়েছে যে উপর থেকে নির্দেশ আছে তাই পাটের গাড়ি বাংলাদেশ যাচ্ছে।
স্থানীয় লরিচালকরা জানতে চান, বাংলাদেশে গিয়ে এইসব চালকরা করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লে তার দায় কে নেবে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায় “যেসব ট্রাক চালক বাংলাদেশে গেলেন তাঁরা লোডিং ও আনলোডিংয়ের সময় সেদেশের অনেক শ্রমিকের সংস্পর্শে আসবেন। তাঁদের মাধ্যমে যদি এই রোগ ভারতে নতুন করে ঢোকে সেক্ষেত্রে কে এর দায় নেবে?” এসব কোনও প্রশ্নের উত্তরই অবশ্য স্থানীয় প্রশাসনের কেউ দিতে চাননি এদিন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় প্রায় ৬০টি গাড়ি এদিন ওপার বাংলায় ঢুকেছে৷
এদিকে পেট্রাপোল সীমান্তে লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাট বীজ ভর্তি ট্রাক। এই সীমান্তের বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা জানান কিভাবে ওই সীমান্ত খুললো জেনে অবাক হচ্ছি৷ তাহলে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে কেন বাণিজ্য বন্ধ থাকবে? এ বিষয়ে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থে আমরা এবং শ্রমিকরাও কাজ করতে সব সময় চাই, কিন্তু এই করোনা আতঙ্কের মধ্যে কিভাবে কাজ করা যাবে তার পদ্ধতিই বা কি হবে তা আমাদের অজানা রয়েছে এখনও। প্রশাসন আমাদেরকে পূর্ণ সহযোগিতা করলে আমরা কাজ করতে পারব । পেট্রাপোল শুল্কদফতর সূত্রের খবর এই বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা পাট বীজ ভর্তি ট্রাকের কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে,সব কিছু ঠিক থাকলে রবিবার সকালে এই সীমান্ত দিয়েও পাট বীজ ভর্তি ট্রাক যেতে পারে ওপার বাংলায় এমনটাই আশারবাণী শোনা গেল এক আধিকারিকের কথায়৷
যদিও করোনা সংক্রমণকে উড়িয়ে না দিয়ে কিভাবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও মজবুত করে এই পথে বৈদেশিক বাণিজ্য চালু করা যায় তার চেষ্টা করছেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ টেলিফোনে দেশের সময় কে জানান তিনি৷এই মন্তব্যের কিছু সময় পরেই ফের টেলিফোনে তিনি জানান, এই মুহুর্তে কোন অবস্থাতেই এই সীমান্তে বৈদেশিক বাণিজ্য চালু করার মত কোন পরিকাঠামো নেই, তার কারণ হিসাবে জানান বাংলাদেশে যেসমস্ত ট্র্যাক চালক এবং খালাসিরা ট্রাক নিয়ে ঢুকবেন তাদেরকে কোয়ারেন্টাই এ রাখার কোন ব্যাবস্থা নেই পেট্রাপোল স্থল বন্দর এলাকায়।পাশাপাশি স্থানীয় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্ত এলাকায়।তার মধ্যে এই সমস্ত ট্রাক চালকদেরকে নিয়ে আরও বেশি উদ্বেগ তৈরী হতে শুরু করেছে৷এই সমস্ত সমস্যা লিখিত ভাবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।এখন প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷