দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দুর্গাপুজোর ঘণ্টা বেজে গেছে। চারিদিকে কাশফুলের সমারোহ। এদিকে রাত পোহালেই মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ দিনকে বলা হয় মহালয়া। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস, এই দিনেই দেবী দুর্গার মর্তে আগমন হয়। বহু বছর ধরে সেই বিশ্বাসে ভর করেই বাঙালিরা ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দেবীকে স্বাগত জানান।
বাঙালির কাছে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই দিনটিতে প্রত্যেক বাঙালির ঘরে ঘরে কার্যত বেজে ওঠে রেডিও। ভোর ৪টে থেকেই দেবীর আগমনের খুশির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেডিওয় বেজে ওঠে মহিষাসুরমর্দিনী। যে-ই ক্লাসিক সময়ের সাথে সাথে আজও বাঙালির হৃদয় জুড়ে রয়েছে। সম্পূর্ণ উপস্থাপনায় মহিষাসুরের হাত থেকে দেবতাদের রক্ষার লক্ষ্যে দেবী দুর্গার আবির্ভাবের কাহিনি বর্ণনা করা আছে।
এর সুর কম্পোজ করেছিলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক। গলা দিয়েছিলেন সেই সময়ের নামীদামি সঙ্গীত শিল্পীরা। ছিল চণ্ডীপাঠ। আর ছিল কালজয়ী বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের গলা। যা শুনতে শুনতে আজও শিহরিত হয়ে ওঠে বাঙালি। আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র।
ধুলো ঝেড়ে রেডিও সারাই করে রেখেছেন বাঙালি।
ধুলো ঝেড়ে স্টোররুম থেকে বের করে আনা হয়েছে তাকে। রাত পোহালেই মহালয়া যে। বেতার বাণী শোনার আগ্রহে গোটাবাংলা ৷।দেবীপক্ষের শুরু হতে আর মাত্র কিছু মুহূর্ত বাকি।
মহালয়া নিয়ে বাঙালির আবেগ সম্পূর্ণ আলাদা। তাই টিভিতে বা মোবাইলে মহিষাসুরমর্দিনী দেখে বা শুনে মন ভরে না আপামর বাঙালির। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনার ভোরে ঠিক ৪ টায় রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের দরাজ গলায় সংস্কৃত স্তোত্রপাঠ ও তাঁর কণ্ঠে শোনা দেবীর আগমনী বার্তা না শুনলে যেন মনেই হয় না দুর্গাপুজো আসছে। তাঁর গলার মহালয়া সমগ্র বাংলার মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে দেয়। তাই মহালয়ার আগের দিন বাড়ির এক কোণে পড়ে থাকা রেডিও সেটটিকে চাঙ্গা করে নেওয়ার তোড়জোড় লক্ষ্য করা যায় প্রতি বছর।