দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, ভারত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা না তুললে প্রতিশোধ নেবেন। ভারত তাঁর চাপের কাছে নতি স্বীকার না করলেও ওই ওষুধ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা কিছু পরিমাণে শিথিল করল।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সাধারণত ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। কোভিড ১৯ রোগেও ওই ওষুধ ভাল কাজ করছে বলে চিকিৎসকদের দাবি। আমেরিকা এখন কোভিড ১৯ রোগের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। এই অবস্থায় আমেরিকা চেয়েছিল, ভারত তাদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাঠাক। একটি সূত্রের খবর, ভারত সরকার স্থির করেছে, দেশে প্রয়োজন মিটিয়ে যদি বাড়তি থাকে তাহলে বিদেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং প্যারাসিটামল পাঠানো হবে।


সারা বিশ্বে ভারতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি হয়। ২৫ মার্চ সরকার সেই ওষুধ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ৪ এপ্রিল ফের বলা হয়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকেও ওই ওষুধ বা তার কোনও উপাদান বিদেশে পাঠানো যাবে না। সাধারণত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপরে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় না।

ট্রাম্প বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি ওই ওষুধ না পাঠান, তাহলে তিনি আশ্চর্য হবেন। কারণ ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক এখন খুবই ভাল। তাঁর কথায়, “মোদী যদি ওষুধ না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন, আমি অবাক হব। তাঁর আগেই আমাকে সেকথা বলা উচিত ছিল। আমি তাঁকে রবিবার সকালে ফোন করেছিলাম। তাঁকে প্রশংসা করে বললাম, আপনি যে আমাদের দেশে আপৎকালীন ওষুধ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।”

এর পরে ট্রাম্প বলেন, “এর পরে যদি মোদী বলেন, ওষুধ পাঠাবেন না, তাহলে বলার কিছু নেই। কিন্তু তার প্রতিশোধ তো নেওয়া হবেই।”
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব মঙ্গলবার সকালে বলেন, মানবিকতার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ যেখানে ভয়াবহ আকার নিয়েছে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রতিবেশী দেশের কিছু সংস্থাকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও প্যারাসিটামল উৎপাদনে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে সেই সঙ্গে এই ওষুধ কয়েকটি দেশে রফতানিতেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাসের তীব্র সংক্রমণে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনের রেকর্ড ছাপিয়ে যাচ্ছে আমেরিকায়। পরিস্থিতি ক্রমেই হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে, সব রকম চেষ্টা করেও করেও কোনও ভাবেই বিপর্যয়ে লাগাম টানতে পারছে না সে দেশ। নিউ ইয়র্ক তো বটেই, সারা দেশের নানা প্রান্তের শহরগুলিতেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শহরের বাইরের অন্য এলাকাগুলির কী অবস্থা, তা এখনও ভাবতে পারা যাচ্ছে না পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পার্ল হারবার ও নাইন ইলেভেনে মৃতের সংখ্যার চেয়েও শুধু এই সপ্তাহে করোনায় বেশি মানুষের মৃত্যু হবে যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন সার্জন জেনারেল জেরোমি অ্যাডামস এ কথাই জানিয়েছেন সোমবার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here