দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আমপান তাণ্ডবের জেরে রাজ্যজুড়ে মোট কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার প্রাথমিক ধারণা আগেই পাওয়া গেছিল বিচ্ছিন্ন ভাবে। আজ একটা সামগ্রিক হিসেব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। বিদ্যুতের সমস্যা থেকে পশুপাখির মৃত্যু– সবটাই উঠে আসে তাঁর খতিয়ানে।
বুধবার বিকেলে নবান্ন সভাঘর থেকে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স চলার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, চাষের ক্ষেত্রে কত ক্ষতি হয়েছে তা জানার জন্য যৌথভাবে সমীক্ষা করা হবে। তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আধিকারিকদের। রিপোর্ট তাড়াতাড়ি এলে কৃষিবিমা সংক্রান্ত কাজও দ্রুত গতিতে করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে, নোনা জলের মধ্যেও যাতে অন্যান্য চাষ করা যায় তাই নিয়ে সরকার কাজ করছে।
তিনি জানান, মোট ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যে। মারা গেছে ৮৭ জন। এক জন দমকলকর্মীর আজই মৃত্যু হয়েছে গাছ কাটতে গিয়ে। ৮.১৩ লাখ মানুষকে সরানো হয়েছে অন্যত্র।
এছাড়াও সাড়ে চার লক্ষটি ইলেকট্রিক পোল ভেঙে গেছে, ৩০০টি ব্রিজ বা কালভার্ট ড্যামেজ হয়েছে। মোট ৭০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে। এক লক্ষ ১০ হাজার স্কুলবাড়ি ভেঙেচুরে গেছে। দেড় লক্ষ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন কেটে গেছে। ৫৮ হাজার হেক্টর জলে মাছচাষের ক্ষতি হয়েছে। ৯ লক্ষ পাখি-পশু মারা গেছে এ পর্যন্ত।
তিনি জানান, ২ লক্ষ মানুষ এখনও ত্রাণ সেন্টারে আছেন। তাঁদের খাবার ব্যবস্থা করতে হবে ভালমতো। জামাকাপড় দিতে হবে। গ্রামের কেউ যাতে অনাহারে না থাকেন, তা দেখতে জেলাশাসকদের অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সব জায়গায় আরও বেশি বেশি করে জলের পাউচ পাঠানোর নির্দেশ দেন। পানীয় জলের অসংখ্য নলকূপ নষ্ট হয়ে গেছে, সেগুলির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
৩৩ লক্ষ সিইএসসি গ্রাহকের মধ্যে আজ সন্ধ্যার মধ্যে ৩২.৭ লক্ষ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩০ হাজার গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ দেওয়া বাকি থাকবে। সেসব জায়গায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হবে। সে জন্য ১০০ দিনের কাজের লোককে কাজে লাগানোর নির্দেশও দেন তিনি।