দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানায় লোকসভায় তাঁদের দ্বৈরথ ও তর্ক ছিল দেখার মতো! কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ফরেন সার্ভিসের অফিসারদের সঙ্গে এক শ্রেণির সিভিল সার্ভিস অফিসারের ইগোর সমস্যা আজন্ম কাল থেকে চলছে। মণিশঙ্কর আইয়ার ছিলেন কেরিয়ার ডিপ্লোম্যাট তথা কূটনীতিক। আর যশবন্ত জেলাশাসক পদ থেকে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী, মণিশঙ্কর ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। আর যশবন্ত সিনহা ছিলেন অর্থমন্ত্রী। ট্রেজারি ও বিরোধী বেঞ্চে বসে এই দু’জনের তর্ক থামাতে বহু সময়েই লোকসভার স্পিকারকে উঠে দাঁড়াতে হত!
কিন্তু সেই মণিশঙ্করের পথেই যেন হাঁটলেন যশবন্ত সিনহা। কংগ্রেস থেকে টিকিট না পেয়ে এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মণিশঙ্কর। প্রায়ই দেখা যেত, মমতার কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে হত্যে দিচ্ছেন মণিশঙ্কর। এ বার যশবন্ত সিনহা তৃণমূলে যোগ দিলেন।
বাজপেয়ী-আডবাণী জমানায় যশবন্ত সিনহার গুরুত্ব ও মর্যাদা দুই ছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা কখনওই হয়নি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থেকে মোদীর প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী হয়ে ওঠার পথে বাধা হওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। তার পর যা অনিবার্য ছিল তাই হয়েছে। বিজেপির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক চুকেছে। এ বার তৃণমূলের দরজা খুলে গেল তাঁর জন্য।
শনিবার সকালে তাঁকে তৃণমূলে সামিল করালেন দলের লোকসভা ও রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও ব্রায়েন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও।
ক’দিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন জোড়াফুলের রাজ্যসভা সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। বলা যেতে পারে, তারই পাল্টা দিতে চাইল তৃণমূল। তবে হ্যাঁ, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে যশবন্ত সিনহার ওজন ও প্রাসঙ্গিকতা বিশেষ আর নেই। তাঁর পরিচয় বলতে এখন একটাই, তা হল—মোদী ও অমিত শাহর বিরোধী। হয়তো সেই সূত্রেই যশবন্তকে তৃণমূলে আনা হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, যশবন্ত অনেক দিন ধরেই বিজেপিতে ব্রাত্য। তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করতেও চায়নি বিজেপি। হয়তো সেই আশাতেই তৃণমূলে যোগ দিলেন তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়ে যশবন্ত বলেছেন, বিজেপি এখন ব্যক্তিকেন্দ্রিক দলে পরিণত হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন। সেই অনাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।