দেবন্বিতা চক্রবর্তী, শান্তিনিকেতন: শান্তিনিকেতনে প্রথম পৌষমেলা বসেছিল ১৮৯৪ সালের ৭ই পৌষ। ছাতিমতলার ছায়ায় মন্দিরের পাশের মাঠে। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ধর্ম্মভাব উদ্দীপনের জন্য’ মেলার প্রস্তাব করেছিলেন। ইতিহাস বলছে, প্রথম পৌষমেলায় খরচ হয়েছিল ১৭৩২ টাকা ১০ আনা। সেই খরচ কবেই লক্ষ টাকার গণ্ডি পেরিয়ে কোটি ছোঁয়ার মুখে। কিন্তু, যে প্রান্তিক মানুষদের কথা ভেবে মেলার সূচনা হয়েছিল, তাঁদের ঠাঁই হয়েছে খুব কমঅংশেই। যদিও মেলা কমিটি এই ব্যবসায়ীদের থেকে জায়গার কোনও ভাড়া নেন না। নিতান্তই অভ্যাসবশত কিংবা কিছু লাভের আশায় এখনও কিছু মানুষ গ্রামগঞ্জ থেকে আসেন এখানে। মেলায় গিয়ে দেখা গেল কেউ এনেছেন একতারা। কারও হাতে বাঁশি, কারওবা স্টলের চারপাশে বিছানো নিজেরই বানানো পাটের ব্যাগ, টুপি, পুতুল এমনকি পোস্টার।

মেলায় বিনোদন মঞ্চের পিছনে গেলে দেখা যাবে কাজের ব্যস্ততা। জিনিস বিক্রির মাঝেই তৈরিও করছেন। বাঁশের নানা জিনিস নিয়ে কেউ এসেছেন নদিয়া থেকে, কেউ মুর্শিদাবাদ থেকে। কিন্তু, খাটনি অনুযায়ী জিনিসের দাম পান না বলে মন খারাপ তাঁদের। বললেন, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গেই যত দরদাম করেন। এমন দাম বলেন যে, সেই দামে জিনিস দিতে পারি না।’’ নেপাল থেকে আনা কারিয়া বাঁশ দিয়ে ফুলদানি, মুখোশ, ল্যাম্পশেড, পেনদানি বানিয়ে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে আসা এক চারুশিল্পী। তার কথায়, ‘‘গত ছয় বছর ধরে মেলায় আসছি। ভালই বিক্রি হয়।’’ ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত দামের জিনিস রয়েছে তাঁর কাছে।

ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারাকে পাথেয় করেই রবিবার থেকে শান্তিনিকেতন-এ শুরু হয়েছে এবারের পৌষ মেলা। এক কথায় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে বিশ্বকবির তীর্থে উৎসবে মাতোয়ারা হাজার হাজার মানুষ । কান পাতলে বাউল গান আর পৌষের হাওয়া গায়ে মেখে সেই সুরে গা ভাসিয়ে দেওয়া, সবমিলিয়ে এক অনন্য উৎসবের ঘনঘটা। রবিবার সকালে বৈতালিকের মধ্যে দিয়ে সূচনা ঘটেছে মেলার। মেলা প্রসঙ্গে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন পরিবেশবিদ্ সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় চারিত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধের দিক থেকে এই মেলা-কে ভিন্ন ভাবে দেখা উচিৎ”। “১৭টি মেলায় এখনও পর্যন্ত কাজ করেছি কিন্তু এই মেলা সম্পুর্ন আলাদা”। “সবকিছু ভেবে ট্রাইব্যুনালে এবিষয়ে আলাদা করে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি”। “পাশাপাশি দাবী করবো ২০০৭সালে কলকাতা বইমেলা সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে তা নতুন করে ভাবার জন্য”। উল্লেখ্য ২০১৬সালে পৌষ মেলার দূষণ সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন সুভাষ দত্ত। যার প্রেক্ষিতে একটি তিন জনের কমিটি গঠিত হয়। যে কমিটির অন্যতম সদস্য সুভাষ দত্ত। মেলা প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী-র উপাচার্য বিদ্যুত চক্রবর্তী বলেন, “দূষণের বিষয় ভাবনা চিন্তা করে পৌষ মেলা শুরুর তিনদিন আগে থেকেই বিদ্যুত সংযোগের ব্যাবস্হা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”। “দেশ বিদেশ থেকে বহু মানুষ মেলায় এসছেন”। “নামী দামী বাউলদের ভীরও চোখে পড়ার মতো”।এ ভাবেই নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে এক দল মানুষ পৌষমেলায় নিজেদের হাতের কাজ বিক্রি করে আসছেন প্রতি বছর। এঁদের থেকে জায়গার ভাড়া হিসেবে কোনও টাকা নেয় না মেলা কমিটি। কিন্তু এঁরা যেন মেলা থেকে একেবারেই হারিয়ে না যান, সে দিকেও কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দর্শনার্থী সকলেই। মেলা প্রাঙ্গণে সৃষ্টি বুটিক এর নান্তু বাবুর কথায় এই মেলায় প্রতিবার আসি মানুষের টানে,দেখা হয় চেনা অচেনা বহু প্রাণবন্ত বাউল ফকিরদের সাথে,তাদের গানের সুর বেঁধে রাখে সারাটা বছর ঐকান্তিক টানে,ব্যাবসা বা পকেটের টানে নয়,এক কথায় মনের মানুষের টানে ছুটে আসি এই মেলায়। “অতএব বলা যেতে পারে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে এবারও নতুন নজির তৈরী করার অপেক্ষায় শান্তিনিকেতন”

এ ভাবেই নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে এক দল মানুষ পৌষমেলায় নিজেদের হাতের কাজ বিক্রি করে আসছেন প্রতি বছর। এঁদের থেকে জায়গার ভাড়া হিসেবে কোনও টাকা নেয় না মেলা কমিটি। কিন্তু এঁরা যেন মেলা থেকে একেবারেই হারিয়ে না যান, সে দিকেও কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দর্শনার্থী সকলেই। মেলা প্রাঙ্গণে সৃষ্টি বুটিক এর নান্তু বাবুর কথায় এই মেলায় প্রতিবার আসি মানুষের টানে,দেখা হয় চেনা অচেনা বহু প্রাণবন্ত বাউল ফকিরদের সাথে,তাদের গানের সুর বেঁধে রাখে সারাটা বছর ঐকান্তিক টানে,ব্যাবসা বা পকেটের টানে নয়,এক কথায় মনের মানুষের টানে ছুটে আসি এই মেলায়। “অতএব বলা যেতে পারে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে এবারও নতুন নজির তৈরী করার অপেক্ষায় শান্তিনিকেতন”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here