

পশ্চিমবঙ্গে সার চালু হওয়ার খবর সামনে আসতেই নাগরিকত্বের জন্য মতুয়া কার্ড এবং ধর্মীয় শংসাপত্র নিতে ভিড় লেগে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে। ভিড়টা মূলত নাটমন্দির এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর দাদা গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরের বাড়ির সামনে।

দুই জায়গাতেই চেয়ার–টেবিল পেতে কম্পিউটার লাগিয়ে বসে রয়েছেন দুই ভাইয়ের ঘনিষ্ঠরা। দুই ভাইয়ের বাড়ির সামনে ভিড়ের ছবির মাঝখানে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে আছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা তৃণমূল প্রভাবিত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরের বাসভবন।

ঠাকুর বাড়ির নাটমন্দিরে ক্যাম্পের দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। মন্দিরের ভিতর এবং বাইরের দেওয়ালে টাঙানো শান্তনুর ছবি দেওয়া ফ্লেক্স। সেখানেই জমাটবাঁধা ভিড়। এখানে আর একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন বারুনি মেলার মাঠে গজিয়ে উঠেছে রকমারি খাবারের দোকান, চায়ের স্টল ও ফটোকপির দোকান।

রানাঘাট থেকে আসা বৈদ্য বিশ্বাস বলেন, ‘প্রয়োজনীয় নথি সাবমিট করে মতুয়া কার্ড এবং ধর্মীয় শংসাপত্র সংগ্রহ করব।’ হরিণঘাটা থেকে এসেছেন তরুণ মন্ডল এবং তাঁর স্ত্রী নিভা মন্ডল। তাঁরা বলেন, ‘বিহারে যা হয়েছে, তার পর আতঙ্কিত হয়েই প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে এসেছি ক্যাম্পে।’
অন্যদিকে মমতাবালার বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সুভাষ সরকার । সিএএ–র জন্য আবেদন করেছেন কিনা জিজ্ঞেস করতেই তিনি মমতাবালার বাড়ি দেখিয়ে বলেন, ‘না, করিনি। আমাদের উনি আছেন। মতুয়া কার্ড নিয়ে কী লাভ?’
সুব্রত ঠাকুর বলেন, ‘মতুয়া কার্ড তো সারা বছর ধরেই দেওয়া হয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সার চালু হচ্ছে এ রাজ্যে। তাই ভিড়টা বেড়েছে।’ মমতাবালা বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর ক্ষমতার জোরে সাধারণ মতুয়াদের বিভ্রান্ত করে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নিচ্ছে। বহু পাগল, গোঁসাই এবং দলপতিরা শান্তনুর এই কাজের বিরুদ্ধে।’
স্থানীয়বাসীন্দা সুখদেব বিশ্বাস জানান, সার–এর আতঙ্কে প্রতিদিন ভোর চারটে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঠাকুরবাড়িতে হাজার হাজার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় করছেন মতুয়া কার্ড নিতে। যে কার্ড বিক্রির টাকা নিয়েই গোল বেধেছে ঠাকুরবাড়ির দুই ভাইয়ের মধ্যে।