দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে বাংলার করোনা পরিস্থিতি। বিগত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৯৪৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। এই মুহূর্তে রাজ্য সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ হাজার ৭৯৮ জন। সবমিলিয়ে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।
রাজ্যের মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা কলকাতার। বিগত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৪৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। কলকাতার পরেই সংক্রমণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সংশ্লিষ্ট জেলায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৭২ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৯০৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৭৬৬ জনের। আশঙ্কাজনকভাবে কমছে সুস্থতার হারও। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৮৮.৬৫ শতাংশ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বৃহস্পতিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ১১ হাজার ৯৪৮। এর মধ্যে কলকাতা (২,৬৪৬) এবং উত্তর ২৪ পরগনা (২,৩৭২) শীর্ষ স্থানে। রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতে করোনা সংক্রমণের চিত্র— দার্জিলিং (৩১৮), জলপাইগুড়ি (১৮২), জলপাইগুড়ি (১৮২), উত্তর দিনাজপুর (১৬৭), দক্ষিণ দিনাজপুর (৬২), মালদহ (৪৬৭), মুর্শিদাবাদ (৪৫৯), নদিয়া (৪৫৫), বীরভূম (৬২৪), পুরুলিয়া (৩৭৬), বাঁকুড়া (২০৫), পশ্চিম মেদিনীপুর (১১০), পূর্ব মেদিনীপুর (৩৪৭), পূর্ব বর্ধমান (৩৭২), পশ্চিম বর্ধমান (৫৯৬), হাওড়া (৬৭১) এবং হুগলি (৫৭৮)। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লক্ষ ৯০৪ জন।
রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণে চিন্তার ভাঁজ প্রশাসনের কপালে। একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রায় হাজারের কাছাকাছি। বৃহস্পতিবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ হাজার ৭৮৪ জন এবং মৃত্যু হয় ৫৮ জনের। ভাইরাস মোকাবিলায় টিকাকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিনের পর ক’দিন আগে রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-কে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবার আরও এক ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ভ্যাকসিন পেতে চলেছে ভারত। চলতি বছরের অগাস্টের মধ্যেই দেশের হাতে মিলতে পারে হায়দরাবাদের বায়োলজিক্যাল ই ভ্যাকসিন।
জানা যাচ্ছে, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় ট্রায়ালের জন্য তৈরি হায়দরাবাদের বায়োলজিক্যাল ই ভ্যাকসিন। এই প্রসঙ্গে নীতি আয়োগের সদস্য ডা. ভি কে পাল বলেছেন, ‘ভারতে তৈরি ভ্যাকসিন বায়োলজিক্যাল ই-র প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ট্রায়াল শেষ হয়েছে। শীঘ্রই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে।’যাঁরা টিকা নিচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ অনেকটাই কম। এমনই পরিসংখ্যান সামনে আনল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তা অনুযায়ী, প্রতিষেধক নেওয়ার পরে সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। রাজ্য জুড়েও এই তথ্যকে সামনে এনে টিকা নিতে উৎসাহ বাড়াতে চাইছে চিকিৎসকরা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ICMR ও ভারত বায়োটেকের তৈরি টিকা কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন ১.১ কোটি জন। তাঁদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরেও সংক্রমণের হার ০.০৪%। প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৬ জন। তারপর কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৪,২০৮ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ১৭৮ জন। এরপর কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯৫ জন। কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে প্রায় ১১.৬ কোটি জনকে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রতি দশ হাজারে যথাক্রমে মাত্র দুই ও তিন। প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি তিন লাখ দু’হাজার ৭৪৫ জনকে। এরপর করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ১৪৫ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৫৪ জন। টিকা নেওয়ার পর করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫,০১৪ জন।