দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারত তথা বিশ্বজুড়ে কোভিড ১৯ সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বানানোর চেষ্টা চলছে ক্রমাগত। একাধিক দেশের সঙ্গে ভারতও সামিল এই ভ্যাকসিন বানানোর চেষ্টায়। কিন্তু ভারতে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন বানাতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে বলেই জানালেন ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির সেক্রেটারি রেণু স্বরূপ।
সোমবার তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্য একাধিক দেশের সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে এই কাজ করছে ভারত। সবাই সবার সঙ্গে তথ্যের আদান প্রদানের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব এই ভ্যাকসিন তৈরি করার চেষ্টা করছে।
ভারতে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করার প্রচেষ্টা যেসব সংস্থা করছে তাদের আর্থিক অনুদান মঞ্জুর করার দায়িত্ব ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির উপর রয়েছে। সোমবারই ক্যাডিলা হেলথকেয়ার লিমিটেডকে অনুদান মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়াও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইমিউনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের মতো সংস্থাকেও আর্থিক অনুদান মঞ্জুর করেছে এই বিভাগ। এই সরকারি সংস্থাগুলি ভ্যাকসিন বানানোর প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে।
রেণু স্বরূপ বলেন, “বর্তমানে আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এই ভ্যাকসিন তৈরি করা। এই প্রচেষ্টায় অনেক সংস্থা বিদেশি সংস্থার সাহায্য নিয়েও কাজ করছে। প্রত্যেকটি প্রচেষ্টা এই মুহূর্তে প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। এই পর্যায়ে পশুদের উপর পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ভারতীয় কোম্পানিগুলি এই বছরের শেষের দিকে ভ্যাকসিনের ব্যাপারে কিছুটা আন্দাজ করতে পারবে। আমরা জানি এই ভ্যাকসিন বানাতে এখনও ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।”
স্বরূপ আরও জানিয়েছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিসিজি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এই সপ্তাহে শুরু হবে। এই বিসিজি ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডকে।
কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই এই ভ্যাকসিনের ব্যাপারে দ্রুত অগ্রগতির জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। একটি রিভিউ কমিটি ও ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে এই কাজ হবে। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন বানানোর জন্য কোনও ফান্ড তৈরি না করা হলেও টাকার কোনও সমস্যা হবে না বলেই জানিয়েছেন রেণু স্বরূপ।
এই কাজে মালিক পেইরিস, স্কুল অফ পাবলিক হেলথের মতো সংস্থাগুলির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। মালিক পেইরিস সংস্থাতেই প্রথম মানুষের শরীর থেকে সার্স ভাইরাসকে আলাদা করা হয়েছিল। একবার এই ভ্যাকসিন তৈরি ভয়ে গেলে তা বারবার বদল করার দরকার পড়বে না বলেই জানিয়েছে মালিক পেইরিস। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, “এই ভাইরাসের মিউটেশন রেট খুবই কম। ফলে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করার সম্ভাবনা খুব বেশি। শুরুতে এই ভ্যাকসিন যেভাবে কাজ করবে, পরেও তা সেভাবে কাজ করবে। কারণ অন্য অনেক ভাইরাস যেমন প্রতি বছর নিজের চরিত্র বদলায় এই ভাইরাস তা করবে না বলেই বোঝা যাচ্ছে।”