দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগামী বছর শুরুতেই করোনার টিকা চলে আসতে পারে ভারতের বাজারে। এমনটাই বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন। সেই সঙ্গে তিনি এও আশ্বাস দিয়েছেন যে একটা নয় একের বেশি ভ্যাকসিনের ডোজ আসতে পারে দেশে। দেশীয় তো বটেই বিদেশি সংস্থার ভ্যাকসিন নিয়ে আসার পরিকল্পনাও রয়েছে কেন্দ্রের। ডিসেম্বরের পর থেকেই ভ্যাকসিন বিতরণের তোড়জোড় শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন হর্ষবর্ধন।
সেরাম ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়ালে রয়েছে। অন্যদিকে, ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগামী বছরের মধ্যেই ৪০ থেকে ৫০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাই মাসের মধ্যে ২০-২৫ কোটি মানুষকে টিকার প্রয়ম ডোজ দেওয়া হবে।
হর্ষবর্ধন বলেছেন, দেশের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। সেফটি ট্রায়ালের প্রতিটি রেজাল্টেই তা প্রমাণিত হয়েছে। তবে আগামী বছরের মধ্যেই সকলকে টিকার দুটি বা তিনটি ডোজ দেওয়া যাবে কিনা সে নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সেরাম ও ভারত বায়োটেকের টিকার দুটি ডোজ দরকার, অন্যদিকে জাইদাস ক্যাডিলার টিকার তিনটি ডোজ দেওয়া জরুরি। এই পরিমাণ ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি করতে হলে যতটা উৎপাদন দরকার তার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন আগেই বলেছিলেন, টিকা চলে এলে সবচেয়ে আগে তিনিই ডোজ নেবেন। সুরক্ষার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে তবেই টিকার বিতরণ শুরু হবে। বিদেশ থেকে যে টিকার ভায়াল আসবে তারও পরীক্ষানিরীক্ষা করেই দেশের বাজারে ছাড়া হবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে টিকার সংরক্ষণ ও বিতরণের কর্মসূচী নেওয়া হবে।
সবচেয়ে আগে দরকার টিকার সংরক্ষণ। দেশের টিকা হোক বা বিদেশ থেকে আনানো কোভিড ভ্যাকসিনের ভায়াল, সবচেয়ে আগে কোল্ড স্টোরেজে ঢোকাতে হবে। এয়ার ট্রান্সপোর্টের পরে টিকার সংরক্ষণ না হলে ডোজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এরপরে ঠিক করা হবে কী পরিমাণে টিকার ডোজ রাজ্যগুলিতে পাঠানো হবে। তার জন্য গাইডলাইন তৈরি হচ্ছে।
টিকার ডোজ বিতরণ নিয়ে সম্প্রতি ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য গগনদীপ কাং বলেছেন, গুরুত্ব বুঝে টিকার বিতরণ করা দরকার। কোনওরকম স্বার্থ বা উদ্দেশ্য ভেবে নয়। চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রবীণ ব্যক্তিদের যেমন টিকার দরকার সবচেয়ে বেশি।
তেমনি কোমর্বিডিটি রয়েছে যাঁদের শরীরে তাঁদেরও আগে টিকা দেওয়া উচিত। প্রবীণরা বলে শুধু নয়, কমবয়সীদেরও টিকার দরকার রয়েছে। কে কেমন পেশার সঙ্গে যুক্ত, লোকজনের সঙ্গে মেলামেশার ধরন ইত্যাদি গুরুত্ব বুঝেই টিকার সঠিক বিতরণ করতে হবে।