দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রবিবার ব্রিগেডে এলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অবস্থার কারণে তিনি আসবেন না বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তিনি নিজেই সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন। তবে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আগেই জানিয়েছিলেন ব্রিগেডে আসবেন বুদ্ধবাবু। তিনি জানান, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই ব্রিগেডে আসবেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই থাকবে সব ব্যবস্থা। ব্রিগেডে এলেও মঞ্চে ওঠেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তবে মঞ্চের নিচে গাড়িতেই বসে বক্তব্য শুনছিলেন তিনি।
৩ বছর পর বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। ২০১৫ সালে বামেদের শেষ ব্রিগেড সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর এবার তিনি প্রধান শ্রোতা হয়ে রইলেন তিনি। উল্লেখ্য, সমাবেশের আগের দিনই দলীয় মুখপত্রে একটি বার্তা দিয়েছেন বুদ্ধবাবু। সেই বার্তায় লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন তিনি। কথা দিলেও রবিবার বামফ্রন্টের ব্রিগেডে এলেন না বাম ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি আসতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে। তিন বছর পর বামেদের ব্রিগেডের অন্যতম দুই বক্তার মধ্যে একজন ছিলেন কানহাইয়া। তাঁর না আসার খবরে স্বভাবতই সামান্য মুষড়ে পড়েন বাম কর্মী, সমর্থকরা। তবে অসুস্থ হলেও সস্ত্রীক ব্রিগেডমঞ্চে পৌঁছন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রবিবার সকালেই বাম নেতা রবীন দেব সেকথা জানিয়ে বলেন, বুদ্ধদেব অসুস্থ থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তাঁকে মঞ্চে আনার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ব্রিগেডে পৌঁছতেই তাঁকে স্বাগত জানান সিপিএম–এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএম–এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সহ শীর্ষ বাম নেতারা। বামেদের ব্রিগেডের জন্য দিনভর ভোর চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শহরে সব ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রিত করেছে পুলিস। বাম কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে বামপন্থী মনস্ক নবীন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরাও যোগ দিয়েছেন ব্রিগেডে।
রবিবার ব্রিগেড সমাবেশে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, ফরওয়ার্ড ব্লকের সর্বভারতীয় নেতা দেবব্রত বিশ্বাস, সিপিআই সাধারণ সম্পাদক সুধাকর রেড্ডি, আরএসপির ক্ষিতি গোস্বামীরা শুরুতেই ভাষণ দেন। তাঁদের পরে ভাষণ দিতে ওঠেন এ দিনের সমাবেশের অন্যতম প্রধান বক্তা তথা সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ‘জনতার ব্রিগেডে’-এর রাজনৈতিক লাইনটা স্পষ্ট করে তুলে ধরেন তিনি। এ দিনের জমায়েতকে প্রথমে ‘লাল সমুদ্র’ বলে আখ্যা দেন ইয়েচুরি। তার পরে বলেন,
‘‘এই লাল সমুদ্র দেখে আমার বিশ্বাস হয়ে গিয়েছে, শুধু আমার নয়, গোটা দেশের বিশ্বাস হয়ে গিয়েছে যে, বাংলার মানুষ দিল্লি থেকে মোদীকে হঠাবেই, বাংলা থেকে মমতাকে হঠাবেই।’’ নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল একে অপরের পরিপূরক রাজনীতি করেন বলে এ দিন ফের দাবি করেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক। মোদীকে ‘পকেটমার’ বলে কটাক্ষ করেন ইয়েচুরি। তার পরে বলেন, ‘‘পকেটমার কিন্তু একা কাজ করে না, একজন সহকারী থাকে। ধরা পড়ে গেলে ওই সহকারীই পকেটমারকে পালাতে সাহায্য করে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নরেন্দ্র মোদী পরস্পরকে সে ভাবেই সাহায্য করছেন কটাক্ষ ইয়েচুরির।
ব্রিগেডে ছবি গুলি তুলেছেন-শান্তনু বিশ্বাস ৷