দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সংঘর্ষ ছড়াল কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে। জানা গিয়েছে, শহরের পূর্ব দিকের কিছু এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন পুলিশকর্মী। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিকও আহত হয়েছেন বলে খবর।
সূত্রের খবর, একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে মঙ্গলবার রাতে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। ওই ফেসবুক পোস্টটি কংগ্রেস বিধায়ক শ্রীনিবাস মূর্তির এক আত্মীয় করেছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে উত্তেজিত জনতা ওই কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ি ঘিরে ফেলে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করে। তাঁর বাড়িতে পাথর ছুড়তে শুরু করে তারা। বাড়ির বাইরে থাকা একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। জনতার সঙ্গে তাদের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, এমনকি শূন্যে গুলি পর্যন্ত ছুড়তে হয়। এই সংঘর্ষেই অন্তত ৬০ পুলিশকর্মী আহত হন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও অনেকে আহত হয়েছে বলে খবর। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বেঙ্গালুরু পুলিশের তরফে টুইট করে বলা হয়, “ডিজি হাল্লি ও কেজি হাল্লি এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঠিচার্জ করেছে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ও শূন্যে গুলি চালিয়েছে। পুলিশ কমিশনার এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যারা এই ঘটনায় অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যে কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে তিনিও ভিডিও বার্তায় সবাইকে শান্ত থাকার আবেদন করেছেন। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইও একটি ভিডিও বার্তায় জনগণকে আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। এই ঘটনার নিন্দে করে তিনি জানিয়েছেন ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশকে সব রকমের অনুমতি দেওয়া আছে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যে ব্যক্তির ফেসবুক পোস্ট ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের আপাতত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দীনেশ গুণ্ডু রাও জনতার কাছে আবেদন করেছেন আইন নিজেদের হাতে না নেওয়ার। তিনি টুইট করে বলেন, “আমাদের বিধায়ক শ্রীনিবাস মূর্তির বাড়িতে ও কাভাল বীরসান্দ্রা থানায় হামলা হয়েছে। কিন্তু কোনওরকমের প্ররোচনায় কেউ পা দেবেন না। আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না। আমি জনতাকে শান্ত থাকার আবেদন করছি। এই সময় কেউ রাজনীতি করবেন না। যেভাবে এই ফেসবুক পোস্ট ব্যবহার করে সংঘর্ষ ও অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হয়েছে তার পিছনে আমি ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি।”