বিরোধী দলনেতার হুমকির জেরে চার বিধায়কের নিরাপত্তা বাড়াল রাজ্য সরকার

0
1102

দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিধানসভার ভিতরেই খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে বিজেপির-ই চার বিধায়ক স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিলেন। এ বার ওই চার বিধায়কের নিরাপত্তা বাড়াল রাজ্য সরকার। ওই চার বিধায়ক— বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ এবং কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায়।

ফাইল চিএ

বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগে থেকে ছিল। কিন্তু বিরোধী দলনেতা হুমকি দেওয়ার পর তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। বৃহস্পতিবার ওই চার জন স্পিকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তারপরেই ওই বিধায়কদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁদের নিরাপত্তা বাড়িয়েছিল রাজ্য। এ বার সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস এনেছিলেন বিজেপির চার বিধায়ক। বৃহস্পতিবার সেই নোটিস গ্রহণ করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি জানিয়েছেন, এবার বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখবে বিধানসভার প্রিভিলেজ কমিটি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেটের উপর বক্তব্য রাখার সময় তাঁর দলের অর্থাৎ বিজেপির চার বিধায়ক তাঁকে বাধা দেয় । এই চার বিধায়ক হলেন বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, কালীয়াগঞ্জের সোমেন রায়, ও রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী। এই চারজনই যদিও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু অফিসিয়ালি তাঁরা বিজেপির বিধায়ক।

রায়গঞ্জের বিধায়ক অভিযোগ করেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নাকি ওয়াক আউট করার সময়ে হুমকি দিয়ে গিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্সের লোক পাঠাবেন বলে। এ নিয়ে তিনি বিধানসভার স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ওই চার জন বিজেপি বিধায়কই সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সোমেন রায়কে নাকি ‘গুলি করে’ মেরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী! এই অভিযোগ আনার পরে তাঁরা স্পিকারকেও এ কথা জানান বলে বিধানসভা সূত্রের খবর। বিজেপির চার বিধায়কই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনেন।

বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ওই বিধায়কদের অভিযোগ ছিল, আয়কর নোটিস ধরানোর হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁদের প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন বিধানসভার অধিবেশনে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষের পরেই ওই চার বিধায়ক স্পিকারের কাছে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন জানান। পরে স্পিকারের নির্দেশে তাঁরা বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর দফতরে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন স্পিকার।

যদিও অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে যাঁরা অভিযোগ করেছেন তাঁদেরই প্রমাণ করতে হবে। স্পিকার জানিয়েছেন, চার বিধায়কের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার পর এই বিষয়টি স্বাধিকাররক্ষা কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। চলতি অধিবেশনেই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিমান।

স্পিকার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন। কোনও বিরোধী দলের নেতা সতীর্থ বিধায়কদের এভাবে হুমকি দিচ্ছেন তা আগে দেখিনি। আমার সময়কালেও এমন ঘটনা ঘটেনি।’’

Previous articleBasanta Utsav : দোলের আগেই বসন্ত উৎসবে মাতল বনগাঁ বিভূতিভূষণ বি.এড. কলেজের পড়ুয়ারা
Next articlePhotography Mela: মোহরকুঞ্জে ফোটোগ্রাফি চর্চ্চার উদ্যোগে ছবি মেলা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here