দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝাপটা যে এ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে তা ঠিক কতটা, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ভারতের ১৬ বছরের বিদেশ-নীতির সঙ্গে আপস। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসা পরিষেবা আরও পোক্ত করার জন্য একাধিক দেশের কাছে হাত পাততে হচ্ছে এবার ভারতকে। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়ার মতো দেশ তো বটেই, সীমান্ত সঙ্ঘাত ঘিরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকা চিনের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়ায় আর আপত্তি নেই দিল্লির।

যদিও সাউথ ব্লকের এক আধিকারিকের যুক্তি, ‘‘ভারত কারও কাছে সাহায্য চায়নি। এগুলো সব টাকা দিয়ে কেনা হচ্ছে। তবে কোনও কোনও দেশের সরকার বা সেখানকার বেসরকারি সংস্থা যদি উপহার হিসেবে কিছু সাহায্য বা অনুদান দিতে চান, তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গেই গ্রহণ করব আমরা।’’

খবর মিলেছে, আজই ৩০০ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠাচ্ছে হংকং। আজই ইন্ডিগোর ফ্লাইটে এসে পৌঁছবে সেগুলি। দরিদ্র দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে চিহ্নিত হয়ে যাওয়া এড়াতে, কোনও রকম বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বিদেশে থেকে ত্রাণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বহু আগে। সাহায্য ছাড়াই বহু বিপর্যয় পারও করেছে ভারত। কিন্তু মহামারীর দ্বিতীয় দফার  প্রকোপে ১৬ বছর আগের সেই নীতি বদলাতে হল। এমনকি পাকিস্তান থেকেও সাহায্যের প্রস্তাব এসেছে, যা এখনও বিবেচনার পর্বে রয়েছে বলে জানা গেছে।

শুধু হংকং নয়, ৭০০টি কনসেনট্রেটর পাঠিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের মতো একটা দেশও। সেখান থেকে আজই এসে পৌঁছচ্ছে ৭০০ অক্সিজেন কনটেনট্রেটর ও ৩৬৫ ভেন্টিলেটর।

অথচ তথ্য বলছে, এ দেশে কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভ যখন শুরু হল, তখনও ভ্যাকসিন নির্মাণে ও চিকিৎসা পরিষেবায় বেশ এগিয়ে ভারত। এমনকি বিশ্বের একাধিক দেশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ সরবরাহ করে ‘আত্মনির্ভর’ হওয়ার বার্তাও দিয়েছিল কেন্দ্র। কমপক্ষে ৮০টি দেশে সাড়ে ৬ কোটি প্রতিষেধক পাঠানো হয়েছিল।


কিন্তু এ ছবি পাল্টে গেছে নির্মম ভাবে। ভয়ঙ্কর সঙ্কট নেমে এসেছে দেশে। দেশের নানা প্রান্তে অক্সিজেনের হাহাকার, বেড নেই, ওষুধ নেই। মৃত্যুমিছিল দীর্ঘায়িত প্রতিদিন। ফলে আত্মনির্ভরতার বার্তা দেওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই মোদী সরকার সাহায্যের মুখাপেক্ষী।

ইতিমধ্যেই আজ, শুক্রবার এ দেশে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ ছুঁয়ে ফেলেছে ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ২৫৭। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গেছেন ৩৬৪৫ জন। দেশের একাধিক হাসপাতাল থেকে খবর এসেছে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার। তাই সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গতিতে লাগাম পরাতে এবার হাত ধরছে একাধিক দেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here