দেশেরসময় বাগদা: বাগদায় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী ছাত্রী নিখোঁজ হবার পর অবশেষে তার সন্ধান পেল পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে বাগদা থানার পুলিশ। ওই ছাত্রীর বাবা মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, রাত দুটো নাগাদ বাগদা থানা থেকে ফোন করে জানানো হয় যে তার মেয়েকে পাওয়া গেছে। তারা যেন থানায় দেখা করে। রাতে এ খবর পেয়ে ছাত্রীর মা বাবা বাগদা থানায় যান। সোমবার ওই ছাত্রীকে বনগাঁ আদালতে তোলা হয়৷
প্রসঙ্গত কলেজ পড়ুয়া এই তরুণীকে শ্লীলতাহানির হুমকি, মারধরের অভিযোগ ওঠে বাগদার এক যুব তৃণমূল নেতা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। উওর ২৪ পরগনার বাগদার রণঘাট পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। শুক্রবার ওই তরুণী বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।.
তদন্তকারীরা জানান, অতীতে সদার বিরুদ্ধে মারধর, মহিলাদের যৌন নির্যাতন, বাইক ছিনতাইয়ের মতো নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস সদা তরুণীকে রাস্তাঘাটে দেখা হলে কটূক্তি করত। অশালীন মন্তব্য করত বলে অভিযোগ।
তরুণী জানান, তাঁকে বিয়ে না করলে দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়েছিল সদা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক প্রোফাইল তৈরি করে অশালীন মন্তব্য করছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে তরুণী তাঁর এক বান্ধবীর বাড়িতে যান। সেখানে সদার স্ত্রী মাম্পি চড়াও হয়ে তরুণীকে মারধর করে সদারই মদতে। ওই দিন বিকেলেও সদা স্কুলের মাঠে তরুণীকে আটকে গালিগালাজ, মারধর করে বলে অভিযোগ। তরুণীর বাবাকে খুনের হুমকিও দেয় সদা।
শুভেন্দুর আচরণে বিরক্ত তৃণমূল নেতৃত্বও। রণঘাটা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গৌতম মণ্ডল বলেন,অতীতে এক মহিলাকে ঘর থেকে বের করে মারধর করেছিল। আমার ভাইপোর কাছ থেকে বাইক কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। সদা ওই সব কাজ করে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা রায়ের মদতে। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় থাকে। ওই তরুণীকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য ফোনও করেছিলেন গোপা।
তরুণীও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফোন করে সদার বিরুদ্ধে অভিযোগ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘সদার স্ত্রী অন্যায় করেছে। সে শাস্তি পাবে। সদার বিরুদ্ধে যেন অভিযোগ না করি।’’ বাগদার তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য পরিতোষ সাহার কথায়, ‘‘সদার বিরুদ্ধে দলের জেলা নেতৃত্বকে জানানো হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, ‘‘পুলিশকে বলেছি অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করতে। ধৃত যুবকের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওকে যদি দলের কেউ মদত দেয়, তাঁদের বিরুদ্ধেও দল কড়া পদক্ষেপ করবে।’’
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপার কথায়, ‘‘তরুণীকে ফোন করেছিলাম, কারণ তিনি আমায় বলেছিলেন, সদার স্ত্রী তাঁকে মারধর করেছে। তাঁকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলাম, তাঁর অভিযোগ কার বিরুদ্ধে। কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। পুলিশের সঙ্গে সদার বিষয়ে কোনও কথা হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ভুল বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। আর পাঁচটা কর্মীর মতো সদার সঙ্গে আমার পরিচয়। অন্যায় করলে শাস্তি তার জন্য আইন আছে ,আইনত ব্যাবস্থা করে শাস্তি দেওয়া হোক।
এরপর তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হন বাগদার যুব কংগ্রেস সভাপতি শুভেন্দু মন্ডল। রবিবার রাতে তরুণীর বাবা বাগদা থানায় গিয়ে তরুণীর নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন৷ বাগদায় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী ছাত্রী নিখোঁজ হবার পর অবশেষে তার সন্ধান পেল পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে বাগদা থানার পুলিশ।
ওই ছাত্রীর বাবা মনোরঞ্জন বিশ্বাস জানান, রাত দুটো নাগাদ বাগদা থানা থেকে ফোন করে জানানো হয় যে তার মেয়েকে পাওয়া গেছে। তারা যেন থানায় দেখা করে। রাতে এ খবর পেয়ে ছাত্রীর মা বাবা বাগদা থানায় যান। সোমবার ওই ছাত্রীকে বনগাঁ আদালতে তোলা হয়৷ আইন জীবী সমীর দাস জানান তরুণীর গোপন জবানবন্দির জন্য বনগাঁ মহকুমা আদালতে আনা হয়েছিল তরুণীকে৷ মেয়েকে ফিরে পেয়ে খুশি তরুণীর পরিবার৷