দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় তাঁর কনভয়ে হামলার ঘটনা নিয়ে এখনও উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। এরই মধ্যে বাংলা থেকে ফিরতেই দুঃসংবাদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার জন্যে। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জয়প্রকাশ নাড্ডা। রবিবার টুইটারে তিনি লিখলেন, ‘করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো অনুভব করার পর পরীক্ষা করিয়েছিলাম, তার ফল পজিটিভ এসেছে। আমার স্বাস্থ্য ভালই আছে, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে নিভৃতবাসে আছি।’ নাড্ডা এও বলেছেন, ‘আমার অনুরোধ, শেষ কয়েকদিনে যাঁরা আমার সংস্পর্শে এসেছেন তাঁরা নিভৃতবাসে চলে যান এবং পরীক্ষা করান।’
অতি সম্প্রতি বাংলায় এসে ব্যাপক হাঙ্গামায় পড়েছিলেন বিজেপি সভাপতি। কলকাতার অদূরে ডায়মন্ড হারবারের কাছে শিরাকোলে তাঁর কনভয়ে চলে ইটবর্ষণ, লাঠি। এই ঘটনা নিয়ে এখনও সরগরম রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অবস্থা সঙ্গিন, মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তরজা চলেছে তৃণমূল এবং বিজেপি নেতাদের।
এদিকে, গাড়িতে সেদিন জেপি নাড্ডার সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যদিও তাঁরা কোনওরকম লক্ষণ অনুভব করছেন কি না তা জানা যায়নি।
कोरोना के शुरूआती लक्षण दिखने पर मैंने टेस्ट करवाया और रिपोर्ट पॉजिटिव आई है। मेरी तबीयत ठीक है, डॉक्टर्स की सलाह पर होम आइसोलेशन में सभी दिशा- निर्देशो का पालन कर रहा हूँ। मेरा अनुरोध है, जो भी लोग गत कुछ दिनों में संपर्क में आयें हैं, कृपया स्वयं को आइसोलेट कर अपनी जाँच करवाएं।
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) December 13, 2020
নাড্ডার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ বিজেপিতে আতঙ্কের পরিবেশ। কারণ সবেমাত্র দু’দিনের বাংলা সফর করে গিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। দুদিনে বঙ্গ বিজেপির প্রায় সব শীর্ষ নেতাই সংস্পর্শে এসেছেন। ফলে নিয়ম মোতাবেক তাঁদের সকলকেই কোয়ারানটিনে থাকতে হবে এখন। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতা-নেত্রীরা আগেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে, তাঁরা সম্পূর্ণই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বাকি যে সব নেতারা নাড্ডার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের সকলকেই এখন টেস্ট করাতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের সুলতানপুরে লাইট হাউসের মাঠে নাড্ডার দলীয় বৈঠক ঘিরে সেদিন সকাল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। বেলা বাড়তেই কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিকে দিকে তৃণমূলের বিক্ষোভ মিছিলের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ডায়মন্ড হারবার শহর, সরিষাহাট, উস্তির শিরাকোল ও কুলপির হটুগঞ্জ এলাকা। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ের চাপে বেসামাল হয়ে পড়ে পুলিশ। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ১১৭ জাতীয় সড়ক। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শিরাকোল মোড়ে জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে নাড্ডার কনভয়। কনভয়ের গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়লে ইট-পাটকেল ছুড়ে একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ইটের আঘাতে আহত হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ একাধিক কর্মী-সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগে পুলিশ উত্তেজিত জনতার উপর লাঠিচার্জ করে কনভয় পার করে দেয়।
তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বাধা উপেক্ষা করে নাড্ডার কনভয় ওইদিন ফের দুপুর ১টা নাগাদ সরিষাহাটেও একইরকম পরিস্থিতির মুখে পড়ে। প্রত্যেক জায়গাতেই তৃণমূলের বিক্ষোভ মিছিল থেকে কনভয়ের গাড়ি লক্ষ করে ইট ছোড়া হয় বলে বিজেপির অভিযোগ। লাইটহাউস মাঠে পৌঁছে নাড্ডা বলেছিলেন, ‘মা দুর্গার কৃপায় এখানে এসে পৌঁছতে পেরেছি।’ সেই ঘটনার জেরে কেন্দ্রের সঙ্গে রীতিমতো সংঘাত বেঁধেছে রাজ্যের। আর, সেই ঘটনার রেশ মিটতে না মিটতেই এবার মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তিনি।