দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি নিয়ে অতীতে বামেরা একবার তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। সে পুরনো কথা। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আবারও দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর মেয়াদে বাংলায় দেড় কোটি- দু’কোটি লোকের চাকরি হয়েছে।
বুধবার সাহাগঞ্জে বন্ধ ডানলপ কারখানার মাঠে সভা ছিল মমতার। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নরেন্দ্র মোদী মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন। বাংলায় নাকি কারও চাকরি হয়নি! বাংলায় দারিদ্র ৪০ শতাংশ কমেছে। বাংলায় দেড় কোটি দু’কোটি লোককে চাকরি দিয়েছি। বাংলা একশ দিনের কাজে নম্বর ওয়ান, স্কিল ডেভেলপমেন্টে নম্বর ওয়ান, দক্ষতা বাড়ানোয় নম্বর ওয়ান।” শুধু তা নয়, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, “মেয়েদের স্বরোজগার যোজনা তৈরি হয়েছে, তার নাম মাতৃবন্দনা। ২৫ হাজার কোটি টাকা রাখা রয়েছে”।
মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত সাড়ে ৯ বছরে সরকার কত লোককে চাকরি দিয়েছে তার স্পষ্ট একটা হিসাব মুখ্যমন্ত্রীর কাছে থাকবে বলে অনেকে মনে করেন। তাঁদের মতে, দেড় কোটি এবং দু কোটির মধ্যে অনেকটা ফারাক। ৫০ লক্ষ। এক দেড় লাখ কমবেশি হিসাব হতে পারে, কিন্তু ৫০ লক্ষের হেরফের বা ব্যবধানটা শুনতেই ধোঁয়াশা লাগছে।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন একদা তাঁর মন্ত্রিসভারই সদস্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কলকাতায় এক সভায় রাজীব বলেন, “আরে আমি তো ওই সরকারের মন্ত্রী ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছি আপনি যে দেড় কোটি দু’কোটি লোককে চাকরি দিয়েছেন, তার লিস্ট প্রকাশ করুন। নইলে মেনে নিন আপনি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে মিথ্যা বলছেন”।
সরকারি পদে কর্মসংস্থানের ছবিটা আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরতে গিয়ে রাজীব বলেন, এখনও সাড়ে ৫ লক্ষ স্থায়ী পদ শূণ্য পড়ে রয়েছে। কিন্তু লোককে অস্থায়ী চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে মাত্র। তাও যে কটা লোককে নেওয়া হয়েছে, সেখানেও ভুরি ভুরি দুর্নীতি।
বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ যে উঠেছে তা বাস্তব। সেই অভিযোগ কোনও রাজনৈতিক দল তোলার আগে তা নিয়ে সরব হয়েছেন চাকরি প্রার্থীরা। প্রতিবার টেট বা স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষা, তার মেধা তালিকা প্রকাশ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। প্রায় প্রতিবারই উচ্চ আদালতে মুখ পুড়েছে সরকারের। এদিন সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন রাজীব।
প্রাক্তন বনমন্ত্রীর কথায়, একজন মুখ্যমন্ত্রী শুধু কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া করে গেলেন আর রাজ্যটাকে রসাতলে পাঠিয়ে দিলেন। উনি কথায় কথায় ভাতার কথা বলেন। এই ভাতা ও ওই ভাতা। আর এখন ডিম-ভাতের কথা বলছেন। আর একশ দিনের কাজের কথা বলছেন। কিন্তু বাংলার মানুষ দয়ার ভাত চায় না। পাঁচ টাকা দিয়ে ওই ডিম ভাতও চায় না। কাজ চায়। পরিশ্রম করতে চায়। তা দিয়ে সম্মানের সঙ্গে উপার্জণ করতে চায়। যাতে তাঁরা পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারেন। তাঁদের সন্তানদের দুধে ভাতে রাখতে পারেন।