বাংলায় জিতলেই ৭৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি বিজেপির!

0
1859

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এই যেদিন জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়েছিল, সেদিনই তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের একটি রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করে। গত দশ বছরে বাংলায় কত নতুন কারখানা হয়েছে, ছোট ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কত মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছে তার বর্ণনা রয়েছে ওই রিপোর্ট কার্ডে।


রবিবাসরীয় বিকেলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বললেন, “ও সব ঢপ। চপ ভাজা ছাড়া বাংলায় আর কোনও শিল্পের দিশা দেখাতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরে শিল্প বন্ধ করে সর্ষে বীজ ছড়িয়েছিলেন। তাতে সেখানকার মানুষের কোনও উপকার হয়নি। বেকার যুবকরা চোখে সর্ষে ফুলই দেখেছেন।” এ কথা বলে দলের যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে পাশে নিয়ে মুকুল বাবু ঘোষণা করেছেন, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরে ৭৫ লক্ষ যুবকের কাজের সুযোগ হবে।

রাজ্য সরকার এবং শাসকদলের উপরে সাঁড়াশি চাপ তৈরির কাজ জোরকদমে শুরু করে দিল বিজেপি। গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক স্তরে এই জোড়া চাপ দেওয়া হবে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার বেনজির ভাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে দিল্লিতে তলব করা হয়। এর মধ্যেই হঠাৎ করে ঘোষিত হয়েছে অমিত শাহের দু’দিনের রাজ্য সফর। আগামী ১৯ ও ২০ তারিখ শাহের আসার কথা বাংলায়। প্রশাসনিক হোক বা রাজনৈতিক, অস্ত্র করা হচ্ছে নাড্ডার কনভয়ে হামলাকেই। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই, কনভয়ে হামলাকে সামনে রেখে বিজেপি তা প্রমাণ করতে মরিয়া। আর তার আগে এবার বাংলার যুব সম্প্রদায়কে কাছে টানতে ক্ষমতায় এলেই বাংলায় ৭৫ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিল বিজেপি।

রবিবার হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে এই ঘোষণা করেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় ও সাংসদ তথা যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূলের শাসনকালে বাংলার বেকারত্ব নিয়ে আক্রমণ শানান তাঁরা। একইসঙ্গে ভোটে জিতলে ৭৫ লক্ষ যুবক-যুবতীর চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, ‘২ মাসের মধ্যে বিজেপি বাংলার ৭৫ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে পৌঁছে যাব আমরা। তাঁদের সকলের নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করা হবে। ভোটে বিজেপি জেতার পরই তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ শুরু হবে। বাংলার এই বেকারত্ব সমস্যা আমরা ঘুচিয়ে দেব।

রবিবারই প্রথম সেই কার্ডের রেজিস্ট্রেশনও করা হয়। মুকুল রায়ের কথায়, ‘নামেই এখন বাংলায় শিল্প সম্মেলন করা হয়। কিন্তু একটা সম্মেলন থেকেও কোনও বিনিয়োগ হয় না। সিঙ্গুরে টাটাকে তাড়িয়ে দেওয়া ছিল সব থেকে বড় ভুল।’ এদিন ফের বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেছেন মুকুল রায়। যদিও পালটা তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া নরেন্দ্র মোদী ৬ বছরে কত মানুষের চাকরি দিয়েছেন, সেই হিসেব বিজেপিকে লজ্জায় ফেলবে। ভোটের আগে এসব বিজেপির ‘জুমলা’ বলেও কটাক্ষ বিরোধীদের।

এদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনা একেবারে টাটকা। তার উপরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফের আসছেন বাংলায়। সেই সফরে যদি পান থেকে চুন খসে, তা হলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রশ্ন তুলে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। যা-ই হোক, যে-ই করুক— যাবতীয় দায় সরকারের ঘাড়ে ঠেলার চেষ্টা চলবে। যা ঘুরেফিরে সেই ৩৫৬ ধারা জারির পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হিসেবেই দেখছে তৃণমূলের একাংশ। তাদের বক্তব্য, বিজেপি নেতারা মুখে বলছেন ৩৫৬ ধারা জারির কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এমন সব দাবি তুলছেন এবং পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছেন যাতে ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষে সওয়ালটি জোরদার ভাবে তোলা যায়।

সৌমিত্র বলেন, “ওই সব এক্সচেঞ্জের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। তা রাখাও হয়নি। কারণ, এ ধরনের কোনও প্রতিষ্ঠান টিকে থাকলে ফাঁস হয়ে যাবে বাংলায় প্রকৃত পক্ষে বেকারের সংখ্যা কত? তাতে বর্তমান সরকারের মিথ্যাচার ফাঁস হয়ে যাবে। বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেকার যুবকদের নাম নথিভুক্ত করবেন। তাতে পরিষ্কার হয়ে যাবে বাংলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে কত যুবকের হাতে কাজ নেই বা ঠিকমতো চাকরি নেই।”
মুকুলবাবু এদিন বলেন, “মোটামুটি ভাবে বাংলায় বেকারত্বের হার হল ১৮ শতাংশ। তা ছাড়া উদ্বেগের বিষয় হল, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাশ প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছেন না। শিক্ষক নিয়োগের নামে কি অনাচার হয়েছে তাও দু’দিন আগে হাইকোর্টের রায়ে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।”

Previous article“পাহাড়কে শান্ত রেখেছি আমরাই,যদি কেউ পাহাড়ে আগুন জ্বালাতে চায় তা পাহাড়ের মানুষ হতে দেবেন না” হুঁশিয়ারি বিনয় তামাংদের
Next articleবুদ্ধদেববাবুকে পড়ে শোনানো হচ্ছে খবরের কাগজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here