দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের সময়সীমা বাড়বে কি না, তা এই মুহুর্তে নিশ্চিত না হলেও রাজ্যের বেশ কিছু এলাকাকে ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করে সেখানে ‘কমপ্লিট লকডাউন’ করার পথে হাটছে রাজ্য৷ ওই সমস্ত এলাকায় যাতে বাইরের কেউ ঢুকতে না পারে আবার খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ অন্যত্র যেতে না পারে সে বিষয়ে যথেষ্ঠ কঠিন পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। এই সব বিষয়ের ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বেশ কয়েকটি হটস্পট চিহ্নিত হল। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের ১০টি এলাকাকে করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ১০টি জায়গাকে সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে বলে জানা গিয়েছে।
গত তিন সপ্তাহের মধ্যে যে সমস্ত এলাকা থেকে করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেই সব এলাকাকেই হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এইসব এলাকা থেকে বেরনো ও ঢোকার পথগুলি চিহ্নিত করে সিল করে দেওয়ার কাজ চলছে।
যে সব এলাকাকে করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি হল – আলিপুর, পণ্ডিতিয়া রোড, মুদিয়ালি, ভবানীপুর, বড়বাজার, নয়াবাদ, হাওড়ার শিবপুর, উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা এবং কালিম্পং। সাধারণ লকডাউনের থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন আরও কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা।
কোনও কারণেই হটস্পট এলাকার কোনও বাসিন্দা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। যে কোনও প্রয়োজনের জিনিস প্রশাসন তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেবে। এতে বাসিন্দাদের সমস্যা হবে সেই কথা মেনে নিয়ে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন যে প্যানডেমিক আটকাতে এ ছাড়া আর কোনও পথ নেই।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা অ্যাক্টিভ পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৮৯ জন। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক না হলেও, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গোড়ায় আটকে দিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সে কারণে ‘হটস্পট’ এলাকাগুলিতে করোনাভাইরাসের ‘র্যান্ডম টেস্ট’ করা হবে। যে হেতু ওই এলাকাগুলি থেকে কাউকে বাইরে বেরতে দেওয়া হবে না, তাই সংক্রমণও অনেকটাই আটকানো যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ‘ভিলওয়াড়া মডেল’ অনুসরণ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ১১টি পরিবার থেকেই ৬০জনের বেশি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। সে জন্য ‘হটস্পট’গুলি চিহ্নিত করে সেখানে কমপ্লিট লকডাউন করা হচ্ছে।
ওই জায়গাগুলিতে বাজার-দোকান বন্ধ রাখা হবে। শুধুমাত্র খোলা থাকবে হাসপাতাল ও ওষুধের দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনও সামগ্রির দরকার পড়লে পুলিশ-প্রশাসন এবং স্থানীয় পুরসভা থেকে সাহায্য করা হবে।
হটস্পট এলাকাগুলিতে কেউ নিয়মের তোয়াক্কা না করলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।