দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলাদেশে অশান্তির ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। একাধিক এলাকায় অশান্তির জন্য মূল সন্দেহভাজন হিসেবে ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই বৃহস্পতিবার কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানিয়েছেন।
কুমিল্লার ঘটনায় কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানস্থলে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে কয়েক ঘণ্টার ভিডিয়ো ফুটেজ বিশ্লেষণ করার পর ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে বাংলাদেশ পুলিশ। ওই ভিডিয়ো ফুটেজে হুসেনকে অশান্তির ঘটনাস্থলে ঢুকতে দেখা যায়।
বাংলাদেশে যে ধর্মীয় হিংসার ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তার শুরুটা হয়েছিল কুমিল্লা থেকে। তারপর চট্টপগ্রাম, নোয়াখালি –সহ বিভিন্ন এলাকায় দাবানলের মতো অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। শুরু থেকেই বাংলাদেশ প্রশাসন খুঁজছিল সেই ব্যক্তিকে ৷ শেষপর্যন্ত সেই মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বাংলাদেশ পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন,বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুমিল্লার অশান্তির ঘটনায় ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচ থেকে রাত ১০টা ১০টা নাগাদ আটক করা হয়।
বাংলাদেশের সংবাদপত্রের দাবি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এই গ্রেফতারির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতারের পর তাঁকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।
সমস্ত জেলা ও সমস্ত থানাকে ইকবাল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার পুলিশ জানতে পারে সমুদ্র সৈকতের ধারে একটি হোটেলে খেতে গিয়েছে ওইরকম চেহারার এক ব্যক্তি। তারপরই তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়। রাতেই তাকে আনা হয় চট্টগ্রামে। এদিন তাঁকে কুমিল্লায় পৌঁছে দেয় কক্সবাজার পুলিশ। এখন তাকে জেরা কতেই এর পিছনে আরও কারা রয়েছে তার খোঁজ পেতে চাইছে পুলিশ।
ইকবাল হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা নগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগর সংলগ্ন দ্বিতীয় মুরাদপুর লস্করপুকুরপাড় এলাকায়। তিনি ওই এলাকার নুর আহমেদ আলমের বড় ছেলে। বাংলাদেশ সরকারি সংস্থা জানিয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন, বসত ভিটেয় হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে ২০ হাজার ৬১৯জনের বিরুদ্ধে। ১০২টি পৃথক মামলা হয়েছে তাণ্ডবের ঘটনায়। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক হিংসায় গ্রেফতার হয়েছেন ৫৮৪ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, মৌলবাদী তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থদের ঘরবাড়ি পুণর্নির্মাণ করতে সরকার আর্থিক সাহায্য দেবে। শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, সরকারের পাশাপাশি আওয়ামি লিগ সাংগঠনিক ভাবেও সমস্ত ইউনিটকে সতর্ক করেছে, এই ঘটনা যাতে না ঘটে। তিনি আরও জানিয়েছেন, আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় টিএম সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবে। বাংলাদেশ সংসদের স্পিকার সিরিন শারমিন চৌধুরী এদিন একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।