বন্যা বিধ্বস্ত তেলঙ্গানায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩০, হায়দরাবাদে ১৫, উদ্ধারে নামল সেনা

0
653

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ চারদিনের তুমুল বর্ষণে বানভাসি তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ। বিগত কয়েক বছরে বৃষ্টি, বন্যার এমন ভয়াল রূপ দেখেনি তেলঙ্গানা। বাঁধভাঙা বৃষ্টিতে ভেসেছে রাস্তাঘাট। জলের তোড় ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মানুষ, গাড়ি, দোকানপাট। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, কার্যত বিপর্যস্ত জনজীবন।

বৃষ্টি, বন্যার কারণে মৃতের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কোথাও ভাঙছে বাড়ির দেওয়াল, কোথাও বাড়ঘরের উঠোন ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জলের স্রোত। এখনও অবধি পাওয়া খবর অনুযায়ী, তেলঙ্গানায় মৃতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। হায়দরাবাদে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাতভর বৃষ্টিতে মঙ্গলবার রাতেই হায়দরাবাদের বান্দলাগুডা এলাকার একটি বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩টি শিশু সহ ৯ জনের। মৃতদের মধ্যে ১৯ দিনের শিশুও রয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ও অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের জন্য দুই রাজ্যকে সবরকমভাবে সাহায্যের কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, তেলঙ্গানা ও অন্ধ্রের পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রয়েছে। যে কোনও রকম সাহায্যের জন্যই প্রস্তুত কেন্দ্রীয় সরকার।

হায়দরাবাদের বারকাস পাহাড়ি এলাকা বন্যার জলে ভাসছে। গতকালই বারকাসে এক ব্যক্তিকে জলের স্রোতে ভেসে যেতে দেখা গিয়েছিল। স্থানীয় দু’জন তাঁকে উদ্ধার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারেননি। টায়ার ছুড়ে দেওয়া হলে সেটিও ভেসে যায় জলের স্রোতে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ভেসে যেতে দেখা গেছে। বারকাসেই গতকাল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ বছরের এক ব্যক্তির। এখনও অবধি বারকাস এলাকাতেই নিখোঁজ পাঁচজন। উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বেশিরভাগ এলাকাতেই। বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। সুরক্ষার জন্য বানভাসি এলকাগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ যোগাযোগ ফের চালু হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী কেটি রামা রাও।

বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের জেরে গভীর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্তের কারণেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরও কয়েকদিন বৃষ্টিতে ভাসবে তেলঙ্গানা। এর পরে ঘূর্ণাবর্ত ধীরে ধীরে মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের দিকে সরে যাবে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তেলঙ্গানার মুখ্যসচিব সোমেশ কুমার জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করেছে রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। বান্দালগুডায় নামানো হয়েছে সেনা। হায়দরাবাদ ও রঙ্গরেড্ডি থেকে এখনও অবধি হাজারের বেশিজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

টলিচৌকি, বেগমপেট, মেহেদিপট্টনমের মতো নিচু জায়গাগুলো বন্যার জলে ভেসে গেছে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন গ্রেটার হায়দরাবাদ পুরনিগমের কর্মীরা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে এ বছর অক্টোবরেই।

বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের জেরে গভীর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্তের কারণেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে তেলঙ্গনা ও অন্ধ্রে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরও কয়েকদিন বৃষ্টিতে ভাসবে তেলঙ্গনা। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।

Previous articleটাকির ইছামতীতে ‘‌কার্নিভাল’‌ এখনও অনিশ্চিত
Next articleআপাতত তিন মাস বন্ধ থাকছে টেলিভিশন রেটিং, ঘোষণা বার্ক সংস্থার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here