পিয়ালী মুখার্জী :
বনগাঁ পুরসভা উদ্যোগী হলো শহরের নিকাশি হাল ফেরাতে। শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার বৃষ্টির জল ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের দুপাশে থাকা নয়ানজুলির মাধ্যমে নিকাশ করা হতো বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখন নয়ানজুলি গুলি জবরদখল হয়ে আবর্জনা জমে ও আগাছায় পথ রুদ্ধ হওয়ায় নিকাশি ব্যাবস্থা ভেঙে পড়েছে। বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে আগাছা ও আবর্জনা সাফ করে নিকাশি ব্যাবস্থা ত্বরান্বিত করার কাজ শুরু হয়েছে। শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে কাজ শুরু হয়েছে যশোর রোডের নয়ানজুলি সাফাইয়ের। দেখুন ভিডিও:
দিন কয়েক আগে স্থানীয় পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ পুরপ্রশাসক মন্ডলীর সদস্য ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে এলাকার নয়ানজুলিগুলি পরিদর্শন করেন।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ২০,, ২২নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল ওই নয়ানজুলি গুলির মধ্যে দিয়ে বক্সীপল্লী, ঢাকাপাড়া, প্রতাপাড়া হয়ে খালে গিয়ে পড়ত। তারপর বিভিন্ন খাল বিলের মাধ্যমে তা গিয়ে মিশতো ইছামতী নদী তে।
গোপাল বাবু বলেন ” যশোর রোডের নয়ানজুলির যাবতীয় বাধা সরাতে পদক্ষেপ করা হয়েছে, আমাদের হাতে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে পাওয়া ২৪ লক্ষ টাকা আছে। তা দিয়ে আমরা আধুনিক একটি মেশিন কিনেছি। সেই মেশিনের মাধ্যমে নয়ানজুলি সাফ করে জল চলাচলের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। “
পুরসভা সূত্রে জানাগিয়েছে নয়ানজুলির মধ্যে দিয়ে শহরের জল যে সকল খাল- বিলে গিয়ে মেশে সেগুলিও শীঘ্র সংস্কার করা হবে। তার জন্য পরিদর্শনে আসবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কিছুক্ষন ভারী বর্ষণেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বনগাঁ শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। সেই জল সরতে দীর্ঘ সময় লাগে। স্থানীয়বাসিন্দাদের কথায় প্রতিবার পুজোর আগে বর্ষার ফলে শহর জুড়ে জল জমে যায় তার ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এখন বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে ফলে মানুষ আশঙ্কায় ভুগছেন। ১৯৫৪ সালে বনগাঁ পুরসভা তৈরি হয়। এলাকার মোট আয়তন ১৪,২৭৪ বর্গ কিলোমিটার। ২o১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ১০হাজার ৬৬৮জন। এলাকার মানুষ জানিয়েছেন ১৯৫৪ সালে পুরসভা তৈরির পর বাম ডান সব দলই ক্ষমতায় এসেছেন, কিন্তু অন্তর্বতী কালে নিকাশি ব্যবস্থার কোনো রূপ পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। তৈরি হয়নি কোনো মাস্টার প্ল্যান। তার ফল ভুগতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
বনগাঁ শহরের নিকাশির প্রধান মাধ্যম ইছামতী নদী। কিন্তু এখন সে নদী তার নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় পরিণত হয়েছে। তাই এখন জল ধারণের ক্ষমতা নদীর জল একটু বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয়ে তীরবর্তী মানুষের বাড়ি ঘর জলমগ্ন করে। আগে এই ইছামতী দিয়ে শহরের জমা জল নির্গমন হতো। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে আসছেন ইছামতীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের।
শহরে অনেকগুলি হাইড্রেন আছে সেখানে দিয়ে জল নদী তে এসে পড়ে না বলে মানুষের অভিযোগ। নালা গুলি আবর্জনায় ভর্তি হয়ে এলাকাবাসীদের জলযন্ত্রনা ভোগ করতে হচ্ছে দীর্ঘ দিন। গোপাল বাবু জানান “যে মেশিন কিনেছি তা দিয়ে হাইড্রেন সাফাই করা যাবে। ১৫ ফুট নীচে থেকে নোংরা তুলে আনা যাবে। ফলে হাইড্রেন দিয়ে এ বার জমা জল নদীতে আসতে পারবে এবং অনেকটাই সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে ধারনা।”