দেশের সময়: বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ। সোমবার সকাল দশ টা নাগাদ অফিস খুলতেই বনগাঁর বিডিও অফিস খুলতেই সেখানে গিয়ে হাজির হন তিনি ,তাঁরপরই এই ইস্তফাপত্র জমা দেন বিডিও অাধিকারিকের কাছে। এই ঘটনায় বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপান উতোর।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে অফিস খোলার পর পরই নিজে হাতে ইস্তফাপত্র নিয়ে বনগাঁ বিডিও অফিসে হাজির হন বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ। নিজেই অফিসের (establishment department) স্থাপনা বিভাগে গিয়ে নিজের হাতে ইস্তফাপত্র জমা করেন , এবং তা গ্রহণও করে নেন দপ্তর।

যদিও প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসেবে ইস্তফাপত্রে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যার কথাই তুলে ধরেছেন। 

এ ব্যাপারে তাঁকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও এই প্রতিবেদন লেখার মূহুর্ত পর্যন্ত এই বিষয়ে তাঁর কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারে এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ বনগাঁ ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক অর্ঘ দত্তকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি এ ব্যাপারে তখনও পর্যন্ত কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, হঠাৎ করেই প্রসেনজিৎ ঘোষ এই ইস্তফা দেওয়ার বিষয় নিয়ে বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র একটাই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে, কি এমন ঘটল, যার জন্য তিনি হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন ?

তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানী সরকার দেশের সময়কে জানান ফেসবুক পোস্টে প্রসেনজিৎ ঘোষের ইস্তফাপত্র বিষয়টি দেখেছি, এখনও এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোন কথা হয়নি, তবে অবশ্যই এর কারণ জেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷

এদিকে, “প্রসেনজিৎ ঘোষ এর পদত্যাগ পত্র সোমবার ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়েছে। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা বেলা ১টা নাগাদ হরিদাসপুর সেতুতে যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। অবরোধের জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়৷ আটকে পড়ে পেট্রাপোল গামী কয়েক হাজার ট্রাক। অবরোধকারীদের মধ্যে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, চক্রান্ত করে ভয় দেখিয়ে প্রসেনজিৎ ঘোষ কে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে৷ তাঁদের অভিযোগের তীর বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রশাসক শঙ্কর অাঢ্যর দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে তাঁরা আরও জানান প্রসেনজিৎ ঘোষকে প্রধানের পদে বহাল রাখার দাবিতে তাঁরা আন্দলন চালিয়ে যাবেন৷

এই বিষয়ে শঙ্কর আঢ্য (প্রাক্তন চেয়ারম্যান বনগাঁ) বলেন শহর থেকে নিয়ে গিয়ে গ্রামের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে পঞ্চায়েতের প্রধান করা হয়েছিল তাঁকে কে সহযোগীতা করেছিলেন সেই সময়, সেই উত্তরেই মিলবে তাঁর প্রকৃত বন্ধু কে৷

বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই অঞ্চল প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ পদত্যাগ করেছেন বলে আমার ধারনা।কারণ দীর্ঘ দিন ধরেই ওই এলাকায় লুটরাজ চালিয়েছেন তিনি ৷জোর জুলুম করে গ্রামের মানুষের জমি থেকে শুরু করে ক্লাব সব দখল করেছেন, এখন সে সব কিছু কে ঢাকতে মানুষের চোখে ধূলোদিয়ে পদত্যাগের অভিনয় করে শুদ্ধ হতে চাইছেন। আসলে ওরা চোরে চোরে মাসতুতো ভাই ৷

যদিও পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পরপরই প্রসেনজিৎ ঘোষকে বনগাঁর রামনগর রোডে দলের একটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়। শ্রমিক নেতা নারায়ণ ঘোষ বলেন প্রসেনজিৎ বাবুর ফেসবুক পোস্ট দেখে অবাক হয়েছি, তবে কেন এমন করেলন জানিনা, এদিন রামনগর রোড এলাকায় বিজেপি ছেড়ে ৭০০ জন তৃণমূলে যোগদান করলেন সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ বাবু,এর থেকে বোলতে পারি তিনি দলেই আছেন ৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here