দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কৃষি বিল নিয়ে রবিবার রাজ্যসভায় হওয়া গোলমালের জেরে সোমবার আটজন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, দোলা সেন। এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই ফ্যাসিবাদী আচরণের বিরুদ্ধে তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এদিন মমতা টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘আটজন সাংসদের সাসপেনশন, যাঁরা কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার্থে লড়লেন, দুর্ভাগ্যজনক এবং স্বৈরাচারী সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন যারা গণতান্ত্রিক নিয়ম এবং আদর্শ মানে না। আমরা এদের সামনে মাথা নোয়াবো না এবং এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে এবং পথে নেমে লড়ব।’
সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো বা ভোটাভুটি না করে কৃষি বিলকে ধ্বনি ভোটে পাস করানোর ইস্যু উত্থাপন করে নবান্নে মমতা বলেন, ‘সংসদীয় নিয়ম মেনে যখন ভাগের কথা বলা হয়েছিল, বিজেপি, কম সদস্য উপস্থিত থাকায় কৃষি বিল পাস করাতে হিংসার পথ বেছে নেয়। কৃষকদের জন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণের রাজ্যের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে কেন্দ্র এবং খাদ্য মহামারী তৈরি করছে।
সারা ভারত যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট পোস্টে লিখেছেন, ‘রাজ্যসভায় যেটা হল সেটা সংসদীয় প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন। নরেন্দ্র মোদিজি সরকারের কৃষকপন্থী অধ্যাদেশ শুধু মৌলিকভাবেই মিথ্যা না, এখন সরকার তার উপর ভোটাধিকারও কেড়ে নিল! সবাই একটাই কথা বলবে, বিজেপি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।’
তৃণমূলের তরফেও রবিবারের ঘটনা সম্পর্কে টুইটারে লেখা হয়েছে, ‘সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য! বিজেপি নিষ্ঠুরভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে সব বিরোধীদের গতকাল রাজ্যসভায় চুপ করিয়ে দিয়ে। দেশের নাগরকিররা, নিজেদের আওয়াজ ওঠান, সবাই নরেন্দ্র মোদিজির একনায়কতন্ত্রের অধীনে চলে যাওয়ার আগে।’
কংগ্রেসও সাংসদদের সাসপেনশন নিয়ে নিন্দা করেছে কেন্দ্রের। সোমবার সংসদের বাইরে বিজয় চওকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘এরকম অগণতান্ত্রিক এবং নির্লজ্জভাবে রাজ্যসভার সাংসদদের এধরনের বহিষ্কারের আমি নিন্দা করছি।
স্থিতাবস্থা ফেরাতে আমরা প্রতিবাদ করব। দেশ এই বিল নিয়ে হওয়া কৃষকদের প্রতিবাদকে দেখছে। আমরা ভোট ভাগের দাবি করেছি এবং পুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনছি।’
আরেক কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘আমরা কৃষকদের জন্য লড়ছি। মোদী সরকারের আমলে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচিত গণতন্ত্র একপাক্ষিক স্বৈরাচারী হয়ে গিয়েছে।
সংসদের ভিতর এবং বাইরে ওরা প্রতিবাদী কণ্ঠকে দমিয়ে দিচ্ছে। কৃষি বিলের বিরোধিতা করা আটজন সাংসদের সাসপেনশন লজ্জাজনক। ভোট ভাগের দাবি কী করে অসংসদীয় হতে পারে? কেন্দ্রে এই বিল কৃষি ক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দেবে।’
এদিকে সাসপেন্ড হওয়া আটজন সাংসদের কেউই সংসদ চত্বর ছেড়ে যেতে চাননি। বদলে তাঁরা সোমবার সকাল থেকে সংসদ চত্বরে অনির্দিষ্টকালীন ধর্নায় বসেছেন তাঁদের সাসপেনশন তোলার দাবিতে। ডেরেক এবং দোলা ছাড়াও সেখানে আছেন সিপিএম–এর কেকে রাগেশ, এলামরাম করিম, আপের সঞ্জয় সিং, কংগ্রেসের রাজীব সতভ, রিপুন ভোরা এবং সৈয়দ নাসির। (ফাইল চিত্র)