দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতায় এখনও অবধি চারজনের শরীরে করোনার নতুন স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া গেল। ব্রিটেন ফেরত কোভিড আক্রান্ত ছ’জনকে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের শরীর থেকে নেওয়া নমুনা পাঠানো হয়েছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স (এনআইবিজি)-তে। নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স তথা জিনের বিন্যাস বের করে চারজনের শরীরে নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। বাকি দু’জনের মধ্যে একজন করোনা নেগেটিভ, এবং অন্যজনের নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট আসা বাকি আছে।
গত ২০ ডিসেম্বর ব্রিটেন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে যে বিমানটি নামে তাতে ২২২ জন যাত্রী ছিলেন। সকলেরই কোভিড টেস্ট করানো হয়েছিল। সংক্রমণ সন্দেহে কয়েকজনকে আলাদা করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। যাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাঁদের শরীরে করোনার নতুন স্ট্রেন ঢুকেছে কিনা তা জানতে নমুনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স (এনআইবিজি)-তে পাঠানো হয়েছিল। কারণ একমাত্র এখানেই নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনের বিন্যাস বের করা হয়। শুধুমাত্র রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্টে করোনার নতুন স্ট্রেন অনেকসময়েই ধরা পড়ে না। ‘ফলস নেগেটিভ’ রিপোর্ট আসে।
এনআইবিজি জানিয়েছিল, কলকাতার ওই স্বাস্থ্যকর্তার ছেলের শরীরে ব্রিটেন-স্ট্রেন তথা করোনার সুপার-স্প্রেডার স্ট্রেন রয়েছে। সেই সময় এনআইবিজিতেই রাখা হয়েছিল ওই যুবককে। এখন তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পরে জানা যায়, বাংলার আরও দুজনের শরীরে করোনার নতুন স্ট্রেন থাকার সম্ভাবনা আছে। তাঁদের মধ্যে একজন কলকাতার, অন্যজন হুগলির বাসিন্দা। ওই দুজনেরও নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এখন আবার বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি আরও একজনের শরীরে বি.১.১.৭ মিউট্যান্ট স্ট্রেন তথা করোনার নতুন স্ট্রেন খুঁজে পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত চারজন পুরুষ ও দুজন মহিলা বেলেঘাটা আইডিতে চিকিৎসাধীন।
বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি চারজনের শরীরে যে করোনার নতুন স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে এ ব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্যভবন এখনও কিছু জানায়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, গত ২৫ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রিটেন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেছিলেন মোট ৪৩৭১ জন যাত্রী। যাঁদের মধ্যে ১০৪ জন ছিলেন এ রাজ্যের বাসিন্দা। ৮৩ জন কলকাতার। ব্রিটেন ফেরত সব যাত্রীদেরই রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট করানো হচ্ছে। সাতদিনের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে সকলকেই। আরটি-পিসিআর টেস্টে যেহেতু অনেক সময়েই করোনার নতুন স্ট্রেন ধরা পড়ে না, তাই সামান্য সন্দেহ হলেই নমুনা জিনোম সিকুয়েন্সের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে বলা হয়েছে, ব্রিটেন থেকে ফেরার পরে কারও শরীরে যদি করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে তাহলে তাঁর নমুনা জিনোম সিকুয়েন্সের জন্য পাঠানো হবে। নতুন স্ট্রেন না মিললেও অন্তত ১৪ দিন তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এর পরবর্তী পদক্ষেপ ডাক্তাররা আলোচনা করে ঠিক করবেন।