দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের ১৬ দিন কেটে গেলেও অকারণে ঘোরাঘুরি বা জটলা করার অভ্যাস কমেনি অনেকেরই। প্রায় প্রত্যেক দিনই দু’বেলা কলকাতা সহ সারা বাংলা জুড়ে পুলিশ মাইকিং করছে। এছাড়াও বিভিন্ন পাড়ার অলিতে–গলিতে সাইকেলে, বাইকে করে পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে।
এরই মধ্যে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে লেক টাউন ট্রাফিক গার্ড এক অভিনব উদ্যোগ নিল। সিগন্যালে যখন বাইক বা গাড়ি এসে দাঁড়াচ্ছে, ট্রাফিক কর্মীরা তখন ‘ঘরে থাকুন’ প্রচার করছেন। মাস্ক–পরা ট্রাফিক কর্মীরা হাতের কাছে প্ল্যাকার্ড ধরে দাঁড়িয়ে থাকছেন কিছুক্ষণ। প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে ‘প্লিজ স্টে অ্যাট হোম’। ভাবনার দিক থেকে অভিনব, সন্দেহ নেই। কিন্তু কলকাতা এবং বনগাঁ সহ কয়েকটি থানা গান গেয়ে, শায়েরি শুনিয়েও এখনও সবাইকে সতর্ক করতে পারেনি। তবে কলকাতা পুলিশ চেষ্টার খামতি রাখছে না।
বনগাঁ ‘ট’ বাজারে পুলিশের নজরদারি৷
বেয়াড়া লোকজনকে ঘরমুখো করতে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। লকডাউনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাড়িও বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৫০০–র কাছাকাছি।
কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় জটলা থাকছেই।
কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর থেকে প্রতিটি থানাতেই বার্তা পাঠানো হয়েছে। অকারণ ঘোরাঘুরি বা উদ্দেশ্যহীনভাবে জটলা হলেই শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে। এই মুহূর্তে এমন কোনও দিন যাচ্ছে না যে, লোকজনকে গ্রেপ্তার করতে হচ্ছে না।
বনগাঁ নিউমার্কেটে পুলিশের টহল৷
কেন এরকম হচ্ছে? এত প্রচারেও মানুষ বুঝতে পারছে না কেন? কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘লকডাউনের ফলে অনেকেই এখনও পর্যন্ত সারা দিন ঘরে থাকার ব্যাপারে অভ্যস্ত হতে পারেননি। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন সময়ে কোনও উদ্দেশ্যে বা অকারণে জটলা করছেন। যাঁরা প্রকৃত কারণ বলতে পারছেন, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে ভুয়ো স্টিকার লাগিয়ে গাড়ি–চলাচলের ওপরেও।’
হাওড়া সেতুতে চলছে পুলিশের নজরদারি৷
বাজেয়াপ্ত করার গাড়ির মধ্যে বেশির ভাগই বাইক। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, নিজের বাইক নয়, অন্যের বাইক নিয়ে এপাড়া–ওপাড়া চক্কর দিতে বেরিয়ে পড়েছে কিছু যুবক। একই ব্যক্তি যদি অকারণে তিনবার বাড়ির বাইরে বেরোন, তা হলে তাঁকে জামিন–অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার করা হবে। এখন যাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, আদালত থেকে শর্তাধীন জামিনে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
মোটামুটিভাবে দুপুরের দিকে অকারণে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে লকডাউন ভাঙার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগামী দিনে পুলিশ আরও কঠোর হবে বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্রে।
ছবি তুলেছেন রতন সিনহা,পার্থ সারথি নন্দী৷