প্রজাতন্ত্র দিবসের শুরুতেই অশান্তি, টিকরি ও সিংঘু সীমান্তে ব্যারিকেড ভাঙলেন কৃষকরা

0
791

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কৃষক নেতারা দিল্লি পুলিশকে কথা দিয়েছিলেন, তাঁদের মিছিল হবে শান্তিপূর্ণ। কিন্তু শান্তিভঙ্গ হল প্রজাতন্ত্র দিবসের শুরুতেই। সকালে দিল্লির টিকরি সীমান্তে বিরাট সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বারিকেড ভাঙলেন কৃষকরা। পুলিশ বলেছিল, প্রজাতন্ত্র দিবসে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ শেষ হলে তবেই কৃষক মিছিল বার করা যাবে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের একাংশ চাইছিলেন, আগেই মিছিল বার করবেন। সেজন্যই তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙেন।

প্রজাতন্ত্র দিবসের সকাল থেকে প্রতিবাদী কৃষকরা দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করলেন দিল্লি। কথা ছিল, দুপুর ১২টার পর শুরু হবে ট্র্যাক্টর মিছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদই খবর এল, সিংঘু সীমান্তে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেছেন কৃষকরা। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ট্র্যাক্টর নিয়ে ঢুকতে শুরু করেছেন তাঁরা। টিকরি সীমানায় ছবিটা একই রকম। হাজার হাজার কৃষক ট্র্যাক্টর নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই মিছিল শুরু করে দিয়েছেন।

সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন তিনটি নির্দিষ্ট পথে ট্র্যাক্টর মিছিল করার অনুমতি দেয় দিল্লি পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার সে সব সরকারি নির্দেশনামাকে ফুৎকারে উড়িয়ে সকাল সকাল মিছিল শুরু করে দেন কৃষকরা। পুলিশ বারংবার অনুরোধ করে ধীর গতিতে এগোতে। কিন্তু কোথায় কী! কৃষকরা তীব্র গতিতে এগিয়ে যেতে থাকেন দিল্লির দিকে। সিংঘু সীমানায় ৫ হাজার কৃষকের জমায়েতের সামনে উপস্থিত সামান্য সংখ্যায় পুলিশকর্মীরা রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েন।


এদিন সকালে টিকরির পাশাপাশি দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে সিংঘু অঞ্চলেও গোলমাল শুরু হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষকে পতাকা নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি ট্র্যাক্টরও ছিল তাঁদের সঙ্গে। সিংঘু সীমান্তে অন্তত ৫ হাজার কৃষক জেদ ধরেন, তাঁদের আউটার রিং রোড ধরে মিছিল করতে দিতে হবে। টিকরিতে কৃষক নেতারা অনুগামীদের শান্তিরক্ষা করতে অনুরোধ করেন। মিছিল কোন পথে যাবে, তা নিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসেন পুলিশের সঙ্গে।

গত রবিবার দিল্লি পুলিশ কৃষকদের মিছিলে অনুমতি দেয়। সেই সঙ্গে সকলকে সতর্ক করে বলে, “মিছিলের সুযোগে দুষ্কৃতীরা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।” পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক বলেন, “১৩ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে পাকিস্তান থেকে ৩০০ টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য মানুষকে বিভ্রান্ত করা।”


কৃষক মিছিলের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের জন্য বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কেউ যেন গাড়ি নিয়ে না যান। সিংঘু ও টিকরি সীমান্তেও কাউকে যেতে বারণ করা হয়েছে। এছাড়া বলা হয়েছে, সম্ভব হলে গাজিপুর বর্ডার, ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, রোড নম্বর ৫৬ এবং অপ্সরা বর্ডার এড়িয়ে চলুন।


দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে এদিন অন্যান্য রাজ্যেও কৃষক মিছিল বেরোবে। উত্তরপ্রদেশের মেরঠ থেকে একটি মিছিল দিল্লির দিকে যাচ্ছিল। পুলিশ তাঁদের অনুরোধ করেছে, আপনারা রাজধানীর দিকে যাবেন না। কারণ সেখানে ইতিমধ্যে বহু লোক জড়ো হয়েছে। মুম্বইতে কৃষকরা আজাদ ময়দানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন। রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি এখন শহরে নেই। রাজভবন থেকে কৃষক প্রতিনিধিদের ফিরে আসতে হয়েছে।

এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার রবিবার কৃষক সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্রে এমন রাজ্যপাল কখনও আসেননি। তিনি অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে দেখা করার সময় পান। কিন্তু কৃষকদের সঙ্গে দেখা করার সময় পাননি।”

Previous articleLive: সেজে উঠেছে দিল্লি-কলকাতা: প্রধান অতিথি-হীন প্রজাতন্ত্র দিবস, শুভেচ্ছা পাঠালেন বরিস, দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Next articleপ্রজাতন্ত্র দিবসে আকাশ ছুঁল রাফাল, কুচকাওয়াজে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী,দেশনায়ক’ নেতাজিকে উৎসর্গ করে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here