দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুর নির্বাচনে কোনও ভাবেই ভোট লুঠ করা যাবে না বলে কলকাতার কাউন্সিলরদের বার্তা দিয়ে দিল তৃণমূল। মঙ্গলবার দুপুরে তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে ব্বসেছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী-সহ তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সেখানেই এই বার্তা দেওয়া হয় কাউন্সিলরদের।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে কাউন্সিলরদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ভোট লুঠ করে জেতার ভাবনা মাথা থেকে বের করে দিন। ভোটে গায়ের জোর দেখাবেন না। যুব তৃণমূল সভাপতি কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কেউ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের বদনাম না করেন। মহানগরের কাউন্সিলরদের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ভোট ঘোষণা হতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নেমে পড়ুন। কিন্তু সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে জিতবেন এই ধারণা একেবারে ঝেড়ে ফেলুন। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও।
পর্যবেক্ষকদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটে লুঠের খেসারত দিতে হয়েছে লোকসভায়। দলের গনভিত্তি কী তার যথাযথ হিসেবই নেই তৃণমূলের কাছে। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৫ সালের পুরভোটে উত্তরবঙ্গ ও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ পুরসভাই গায়ের জোরে দখল করা হয়েছিল। বিরোধীদের দাঁড়াতেই দেওয়া হয়নি। ভোটের দিনেও দেখা গিয়েছিল শাসকদলের বেপরোয়া আস্ফালন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই কারণেই একুশের ভোটের আগে সমর্থনের জল মাপতে চাইছে তৃণমূল।
এদিন কাউন্সিলরদের উদ্দেশে অভিষেক, সুব্রত বক্সীরা এও বলেন, কেউ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য দলের নির্দেশের বাইরে না যান। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, তৃণমূলের কাউন্সিলরদের অনেকেই এটাকে পেশা করে ফেলেছেন। ফলে তাঁরা মনে করেন, যেনতেনপ্রকারেন ভোটে জিততে পারলেই পাঁচ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত। দলের স্পষ্ট নির্দেশ, এসব আর চলবে না।
এর আগে জেলা সভাপতিদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলে দিয়েছিলেন, সব কাউন্সিলর টিকিট পাবেন না। যাঁরা ভাল কাজ করেছেন তাঁরাই তিকিট পাবেন। অর্থাৎ দিদি এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, সব জেতা কাউন্সিলরও যে টিকিট পাবেন তার কনও গ্যারান্টি নেই।
এদিন অভিষেকরাও কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, টিকিট পাওয়া না পায়া নিয়ে কেউ অন্তর্ঘাত করবেন না। যাঁরা ভাল কাজ করেছেন, তাঁরা টিকিট পাবেন। ভোট লুঠে নিষেধাজ্ঞার কথা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিড়াল বলে মাছ খাব না, আঁশ ছোঁব না, কাশি যাব! ভোট লুঠ না করলে তৃণমূল পার্টিটাই উঠে যাবে।”
রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “ভোট লুঠ না করলে যে তৃণমূল হারে তা লোকসভায় প্রমাণ হয়ে গেছে। আর ওরা চাইলেই ভোট লুঠ করতে পারবে না। ময়দানে বিজেপির কর্মীরা থাকবে। ভোটের দিন লুঠের চেষ্টা হলে যা বোঝার ময়দানেই বুঝে নেওয়া হবে।”