দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পাঞ্জাবের পুরভোটে সাতটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মধ্যে পাঁচটি দখল করল কংগ্রেস। যে কর্পোরেশনগুলি কংগ্রেস দখল করেছে, তার মধ্যে আছে আভোর, ভাতিন্দা, কাপুরথালা, হোশিয়ারপুর এবং মোগা। এছাড়া বাটালা ও হোশিয়ারপুরে তারা এগিয়ে আছে।
বুধবার সকালে পাঞ্জাবে ১০৯ টি পুর পরিষদ ও নগর পঞ্চায়েতের ভোটগণনা শুরু হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই ভোট হয়েছিল। মোট ভোটারদের ৭১.৩৯ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। নতুন তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে যে রাজ্যগুলিতে জোরদার আন্দোলন হচ্ছে, পাঞ্জাব তার মধ্যে অন্যতম।
মঙ্গলবার কয়েকটি বুথে রি-পোলিং হয়। সেগুলির ফলাফলও প্রকাশিত হবে বুধবার। এদিন মোহালি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ৩২ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ফের ভোট হচ্ছে। ওই কর্পোরেশনের ভোটগণনা হবে বৃহস্পতিবার।
পুরভোটে মোট ৯২২২ জন প্রার্থী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে নির্দল ছিলেন ২৮৩২ জন। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২০৩৭। মুক্তসরের কংগ্রেস প্রার্থী ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন। কৃষি আইন নিয়ে পাঞ্জাবে রীতিমতো চাপে পড়েছে বিজেপি। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১০০৩। এবার শিরোমণি অকালি দল এককভাবে লড়াই করছে। তারা মোট ১৫৬৯ জন প্রার্থী দিয়েছিল।
ভোট হয়েছিল মোট ২২১৫ টি ওয়ার্ডে। তার মধ্যে ১৪৮০ টি ওয়ার্ড জেনারেল ক্যাটেগরিতে পড়ে। ৬১০ টি ওয়ার্ড তফসিলী জাতির জন্য সংরক্ষিত। অন্যান্য পশ্চাৎপদ জাতির জন্য সংরক্ষিত ছিল ১২৫ টি ওয়ার্ড। পাঞ্জাব স্টেট নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার ডেপুটি কমিশনারদের নির্দেশ দেয়, সংবেদনশীল ও অতি সংবেদনশীল ওয়ার্ডগুলিতে মাইক্রো-অবজারভার নিয়োগ করতে হবে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস বুথ দখল করেছে। কয়েকটি এলাকায় হিংসার আশ্রয় নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে ৮০ দিনের বেশি। সরকারের সঙ্গে ১১ বার বৈঠকে বসেছেন কৃষক নেতারা। তাতেও কোনও সমাধান হয়নি। কৃষক নেতারা বলেন, এবার নতুন কৌশলে আন্দোলন হবে। দিল্লি সীমান্তে আর বেশি মানুষ অবস্থান করবেন না। অনেকে নিজেদের গ্রামে গিয়ে আন্দোলন করবেন। বিভিন্ন রাজ্যে বড় আকারের জনসমাবেশ করে কৃষক আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরি করা হবে।
কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত স্থির করেছেন, এবার দেশ জুড়ে কিষাণ মহাপঞ্চায়েত করা হবে। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানে বেশ কয়েকটি মহাপঞ্চায়েতে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন। দিল্লি সীমান্তে উপস্থিত এক কৃষক বলেন, “এখানে ১০ লক্ষ কৃষক জমায়েত হলেই বা কী যায় আসে? সরকার কি আমাদের দাবি মেনে নেবে? আমরা সারা দেশ জুড়ে প্রতিবাদ করব।”
গাজিপুর প্রটেস্ট কমিটির সদস্য জগতার সিং বাজওয়া বলেন, “সরকারের একগুঁয়েমির কথা চিন্তা করে আমরা দিল্লি সীমান্তে বড় জমায়েত করেছিলাম। কৃষক নেতারা তাঁদের কৌশল বদলাচ্ছেন। তাঁরা চান, প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি বাড়ির মানুষ কৃষক আন্দোলনের কথা জানুক। আমরা আগামী দিনে নানা জায়গায় মহাপঞ্চায়েত করব।”