দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদীদের পৃষ্ঠপোশক তা পরিষ্কার হল। একটি টিভি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ অকপটে স্বীকার করেছেন, পাকিস্তানে কাশ্মীরীদের মুজাহিদিন হতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ওসামা বিন লাদেন, আয়মান আল–জাওয়াহিরি, জালালুদ্দিন হাক্কানির মতো বিশ্বের ত্রাস জঙ্গিরা যে তাঁর দেশে নায়কোচিত সম্মানে পূজিত হয়। ফারহাতুল্লা বাবর নামে এক পাকিস্তানি রাজনীতিকের সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপের কিছু অংশ শেয়ার করেছেন। সেই ক্লিপে মুশারফকে স্বীকার করতে শোনা যাচ্ছে, ‘যে সব কাশ্মীরীরা পাকিস্তানে চলে আসেন তাঁরা নায়কের সংবর্ধনা পান। আমরা ওঁদের প্রশিক্ষণ দিতাম এবং পাশে থেকে সমর্থন করতাম।
আমরা ওনাদের মুজাহিদিন বলে মনে করতাম, যাঁরা ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে লড়বে। লস্কর–এ–তৈবার মতো অনেক জঙ্গি গোষ্ঠী ওই সময়েই তৈরি হয়েছিল। জেহাদিরা আমাদের কাছে নায়ক।’
এরপরই লাদেন, হাক্কানির মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি নেতাদের পাকিস্তানের নায়ক বলে মন্তব্য করেন অবসরপ্রাপ্ত পাক সেনাপ্রধান মুশারফ। সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, ‘১৯৭৯ সালে সোভিয়েৎদের হঠাতে এবং পাকিস্তানের সুবিধার্থে আমরা আফগানিস্তানে ধর্মীয় সন্ত্রাস শুরু করেছিলাম।
সারা বিশ্ব থেকে মুজাহিদিনদের নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম, অস্ত্র সরবরাহ করেছিলাম। তালিবানদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। ওঁরা সবাই আমাদের নায়ক ছিলেন। হাক্কানি, ওসামা বিন লাদেন, আয়মান আল–জাওয়াহিরি আমাদের নায়ক ছিলেন। তারপরই তামাম বিশ্বের পরিবেশ বদলে গেল। বিশ্ব অন্যরকমভাবে সব কিছু দেখতে লাগল। আমাদের নায়করা খলনায়কে বদলে গেলেন।’
মুশারফের এই স্বীকারোক্তিতে ফের প্রমাণিত হয়ে গেল, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে এবং পরিপুষ্ট করে চলেছে। কাশ্মীরকে অস্থির করে রাখার পিছনে যে তাদেরই হাত রয়েছে সেটাও পরিষ্কার হল। মুশারফের স্বীকারোক্তি দৃশ্যতই অস্বস্তিতে ইমরান খান সরকার। কারণ, দিন কয়েক আগেও তারা রাষ্ট্রপুঞ্জে দাবি করেছিল, তাদের সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও যোগ নেই, বরঞ্চ তারাও অন্যান্য দেশের মতো জঙ্গি নাশকতার শিকার। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এনিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
পাকিস্তানকে তুলোধনা করে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে লিখেছেন, আফগানিস্তানের পাশতুন সম্প্রদায়ের দুটি প্রজন্ম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছেন এভাবে পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গি মদতের কারণে।