পাঁচ বাঙালি কোমর বাঁধছেন ২০২০ অলিম্পিকে পদক জেতার লক্ষ্যে

0
461

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ. সাত মাস পরেই সেজে উঠবে টোকিও। বসবে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকসের আসর। ২৪ জুলাই থেকে ৯ অগস্ট পর্যন্ত চলবে এই প্রতিযোগিতা। ১৯৬৪ সালের পর এই দ্বিতীয়বার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকস আয়োজন করছে জাপান। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অ্যাথলিট, সাঁতারু, তিরন্দাজ, শ্যুটার থেকে শুরু করে একাধিক খেলার প্রতিযোগীরা ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে। ভারতের পক্ষেও এবার সুযোগ কিছু পদক জেতার। আর ভারতের এই পদক জেতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে বাংলার একঝাঁক প্রতিযোগী।

এক নজরে দেখুন: কারা রয়েছেন এই তালিকায়।

অতনু দাস: ২০১৬ রিও অলিম্পিকসে বাংলার অতনু দাসই ছিলেন তিরন্দাজির একমাত্র মুখ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালস পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন তিনি। টোকিও অলিম্পিকসেও তাঁর কাঁধেই রয়েছে দেশকে পদক এনে দেওয়ার দায়িত্ব। ইতিমধ্যেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তরুণদীপ রাই ও প্রবীণ যাদবের সঙ্গে মিলে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করায় সরাসরি টোকিও যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছেন কলকাতায় জন্ম নেওয়া ২৭ বছরের এই তিরন্দাজ।

দীপা কর্মকার: রিও অলিম্পিকসে তাঁর ‘প্রদুনোভা ভল্ট’ চমক দেখিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। অল্পের ব্যবধানে চতুর্থ স্থানে শেষ করায় পদক জোটেনি। কিন্তু সেই ভল্টই তাঁর জীবনে এনেছে বাধা। হাটুর চোটে তারপর থেকে আর নামতে পারেননি জিমন্যাস্টিকসের আখাড়ায়। এবছর এখনও পর্যন্ত কোনও টুর্নামেন্টে নামেননি দীপা। কিন্তু তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী জানাচ্ছেন টোকিও অলিম্পিকসে খেলার সুযোগ এখনও আছে দীপার। নতুন বছরের শুরুতেই পরপর জিমন্যাস্টিকসের তিনটে বিশ্বকাপ রয়েছে। এই তিনটে টুর্নামেন্টেই সোনা বা অন্তত রূপো জিততেই হবে দীপাকে। তাহলেই মিলবে রিও যাওয়ার ছাড়পত্র। আপাতত সেই প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত ত্রিপুরার আগরতলার এই মেয়ে।

স্বপ্না বর্মন: ২০১৮ সালের এশিয়ান গেমসে হেপট্যাথলনে সোনা জিতে দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির এই মেয়ে। কিন্তু তারপরেই চোট লাগে তাঁর। দু’পায়েই ছটি করে আঙ্গুল থাকায় এমনইতেই বেশ কিছু ইভেন্টে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় স্বপ্নাকে। তারই প্রভাব পড়েছিল শরীরে। স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কমপ্লেক্সে চলছিল তাঁর রিহ্যাব। কিছুদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে স্বপ্না জানিয়েছেন, “আমি ৯৫ শতাংশ ফিট। পাঁচ শতাংশের জন্য পরিশ্রম করছি। আশা করছি টোকিও অলিম্পিকসে ভাল করতে পারব।”

হিমা দাস: ২০১৮ সালে অনুর্ধ্ব ২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন অসমের এই মেয়ে। এশিয়ান গেমসেও রূপো জিতেছেন হিমা। তারপর একের পর এক টুর্নামেন্টে সোনা এসেছে এই সোনার মেয়ের ঝুলিতে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতীয় দলে ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পিঠের ব্যথায় টুর্নামেন্ট থেকে নাম সরিয়ে নিতে বাধ্য হন হিমা। ফলে সরাসরি এখনও টোকিওর টিকিট পাননি তিনি। তবে হিমার আশা টোকিওর ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন তিনি। অলিম্পিকসেও ফের সেই দৌড় দেখা যাবে এই বাঙালি মেয়ের কাছে।

মেহুলি ঘোষ: মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কমনওয়েলথ গেমস ও যুব বিশ্বকাপে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলসে রূপো জিতেছিলেন বৈদ্যবাটির চতুষ্পাটি লেনের মেহুলি ঘোষ। এই ডিসেম্বর মাসেই সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। তারপরেও অবশ্য টোকিও যাওয়া নিশ্চিত হয়নি তাঁর। এই ব্যাপারে মেহুলির কোচ তথা অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকার জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত মেহুলি অলিম্পিকসের যোগ্যতা পায়নি। অপূর্বি চাণ্ডেলা মোটামুটি নিশ্চিত টোকিওর বিমানে ওঠার জন্য। বাকি একটা জায়গার জন্য লড়াই মেহুলি ঘোষ, অঞ্জুম মুদগিল ও এলাভিনিল ভালারিভানের মধ্যে। তবে ভাল ব্যাপার হল এই ইভেন্টের জন্য ভারতের দুটো কোটা আছে। অর্থাৎ যে দুই শ্যুটারের অ্যাভারেজ ভাল থাকবে তারা সুযোগ পাবে। সামনে বছর মার্চ মাস নাগাদ বোঝা যাবে কারা যাচ্ছে টোকিও। তবে সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনা জয় মেহুলিকে এগিয়ে রাখবে।”


এই পাঁচজনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কেবলমাত্র অতনু দাসের টোকিও যাওয়া নিশ্চিত। তবে বাকিরাও ভীষণভাবে দৌড়ের মধ্যে আছেন। বাংলার চার মেয়ে অর্থাৎ, স্বপ্না, দীপা, হিমা ও মেহুলি যদি টোকিও যান তাহলে ভারতের পদক জয়ের সম্ভাবনা যে শুধু বাড়বে তাই নয়, অলিম্পিকসের মঞ্চে বাংলার নাম উজ্জ্বল হওয়ারও সুযোগ থাকবে।

Previous articleসব রাজ্যকে হুঁশিয়ারি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর,নাগরিকত্ব আইন থেকে মুক্তি নেই
Next articleকলকাতায় উদ্ধার ২১ কেজি গাঁজা ,গ্রেফতার ১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here